Showing posts with label ইন্টারনেট. Show all posts
Showing posts with label ইন্টারনেট. Show all posts
ভার্চুয়াল জগৎ সীমাহীন বিস্তৃত ও পরিব্যপ্ত। তাই এখানে ইসলামী মূল্যবোধ ও ধর্মীয় আবহ টিকিয়ে রাখা অনেকের জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। আর তাই ‘সালামওয়েব’ নামে একটি নতুন ব্রাউজার তৈরি করেছে মালয়েশিয়াভিত্তিক স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠান সালাম ওয়েব টেকনোলজিস। এতে মুসলিমদের ধর্মীয় মূল্যবোধ অক্ষত রাখা সহজ হবে বলে ধারণা তাদের।

জানা গেছে, অনলাইন জগতকে পক্ষপাত মুক্ত রাখতে এবং ব্রাউজারের অপব্যবহার রোধে এটি চালু করা হয়েছে। একইসঙ্গে ব্যবহারকারীর গোপনীয়তাবিষয়ক ক্ষেত্রেও এটির গঠন রীতিতে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সবমিলিয়ে ব্রাউজারটি যেন মুসলিমবান্ধব ও শান্তিপূর্ণ হয়, তাই এর নাম দেওয়া হয়েছে ‘সালামওয়েব’।

সালামওয়েব ব্রাউজারটি মোবাইল, ল্যাপটপ ও ডেস্কটপ ইত্যাদিতে ব্যবহার করা যাবে। মেসেজিং, নিউজসহ আরও বেশকিছু অ্যাপ্লিকেশন এ ব্রাউজারে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে মালোয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার গ্রাহকদের জন্য তৈরি করা হলেও এটিকে বৈশ্বিক রূপ দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে কর্তৃপক্ষের।
বিশ্বের ১০ শতাংশ মুসলিমকে টার্গেট করে তারা অগ্রসর হচ্ছেন। তবে উদ্যোগ বাস্তবায়নের পথে কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখিও হচ্ছে সালামওয়েব। শুরুতেই গুগল ও ফেসবুকের মতো কোম্পানিগুলো তাদের সমালোচনা করেছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালও তাদের এ উদ্যোগ ভালো চোখে দেখেনি।

সালামওয়েব টেকনলোজির ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাসনি জেরিনা মাহমুদ খান জানান, ‘অসংলগ্ন’ কনটেন্টের কারণে টুইটারকে ইতিমধ্যে ‘নারীদের জন্য বিষাক্ত স্থান বা নরক’ বলে অভিহিত করেছে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস। তাই আমরা ইন্টারনেটকে একটি উত্তম স্থান হিসেবে পরিবর্তন করতে চাই। আমরা জানি, ইন্টারনেটে ভালো-মন্দ; দুই দিকই রয়েছে। তাই আমরা সালামওয়েবে এমন একটি টুল তৈরি করেছি, যেটি দিয়ে কেবল ভালো কিছুই উপভোগ করা যাবে।
তিনি আরও বলেন, ব্রাউজারটি কনটেন্ট ফিল্টারিং করবে। পর্নোগ্রাফি বা জুয়ার কোনো ওয়েবসাইটে প্রবেশের চেষ্টা করলে গ্রাহককে সঙ্গে সঙ্গে সতর্ক করা হবে। এছাড়াও মুসলিমদের ধর্মচর্চা সহজ করতে নামাজের সময় জানিয়ে দেওয়ার মতো বিষয়গুলোও এতে রাখা হয়েছে। আর প্রধানত মুসলিমদের টার্গেট করে আমরা ব্রাউজারটি তৈরি করলেও আমাদের লক্ষ্য হলো সর্বজনীন মূল্যবোধকে উৎসাহিত করা। তাই যেকেউ এটি ব্যবহার করতে পারবেন। কারণ ইন্টারনেট দিন দিন ক্ষতিকর হয়ে উঠছে—তাই আমাদের বিকল্প কিছু করা জরুরি হয়ে পড়ছে।
ভারতে নিষিদ্ধ করা হতে পারে পাবজি গেম। পাঞ্জাব-হরিয়ানা কোর্টের আদেশের পর এবার পাবজি গেম বন্ধে চিন্তা ভাবনা শুরু করেছে কেন্দ্রীয় সরকার।এ বিষয়ে দেশটির তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় থেকে কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। 
উল্লেখ্য যে, পাঞ্জাব-হারিয়ানা হাইকোর্ট ভারতীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়কে পাবজি বন্ধের জন্য ব্যাবস্থা নিতে আদেশ করেছে। এর আগেও কয়েকটি রাজ্যে পাবজি বন্ধ হলেও কেন্দ্রীয় ভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয় নি।
এর আগে এইচসি অরোরা নামের এক আইনজীবী পাঞ্জাব ও হরিয়ানা কোর্টে পাবজি গেম বন্ধ করার আবেদন করেছিলেন। তার দাবি ছিল, এই গেম বাচ্চাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে বাধা সৃষ্টি করছে। বাচ্চারা গেমের নেশায় বুঁদ হয়ে পড়ছে।

বাচ্চারা ঘণ্টার পর ঘণ্টা পাবজি খেলে চলেছে। একটি সমীক্ষায় জানা গেছে, চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা টানা গেম খেলছে বাচ্চারা। তা ছাড়া অত্যধিক অ্যাকশন গেম খেললে মানসিক বিকাশে প্রভাব পড়তে পারে। এমনকি পড়াশুনা কিংবা স্কুলেও অমনোযোগী হয়ে উঠতে শিক্ষার্থীরা।

অতিরিক্ত অ্যাকশন গেম খেলায় বাচ্চাদের মধ্যে হিংসার প্রবৃত্তি বাড়ছে বলেও দাবি করেছিলেন ওই আইনজীবী। সমস্ত যুক্তি-তর্কের পর পাঞ্জাব ও হরিয়ানা আদালত এই ব্যাপারে রায় দান করে।
পাবজি গেমের নেশায় বুঁদ হয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছেন কেউ কেউ। এমনকী এই গেমের জন্য মৃত্যু খবরও পাওয়া গিয়েছিল। আইনজীবী জানিয়েছিলেন, পাবজি-র নেশা ব্লু হোয়েল গেম-এর থেকেও মারাত্মক। 

- সূত্রঃ টাইমস অফ ইন্ডিয়া



মার্কিনিদের গুপ্তহত্যার শিকার আল-কুদস ফোর্সের প্রধান ও বিপ্লবী গার্ডস বাহিনীর কমান্ডার মেজর জেনারেল কাসেম সোলাইমানি নিহত হওয়ার ঘটনায় কঠিন প্রতিশোধ নেয়ার হুঙ্কার দিয়েছে ইরান। উত্তেজনার মাঝেই শুরু হয়ে গেছে ইরান যুক্তরাষ্ট্রের সাইবার যুদ্ধ।  

"ইরান সাইবার সিকিউরিটি গ্রুপ হ্যাকার্স" ইতিমধ্যেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ডিপোজিটরি লাইব্রেরি প্রোগ্রামের সরকারি ওয়েবসাইট হ্যাক করেছে। ওয়াশিংটন ডিপার্টমেন্টের আরেকটি সরকারি ওয়েবসাইট ও ইতিমধ্যেই আক্রান্ত হয়েছে। 

স্বাভাবিক ভাবেই হ্যাকাররা ওয়েবসাইটের সকল তথ্য মুছে দিয়ে  মার্কিন হামলায় নিহত ইরানের শীর্ষ সেনা কমান্ডার কাসেম সোলেইমানি হত্যার প্রতিশোধের শপথ করে এক বার্তা প্রকাশ করেছে। রয়েছে প্রেসিডেন্ট ট্র্যাম্পকে ব্যাঙ্গ করা একটি ছবিও। 
এছাড়াও ইরানের নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনী ও ইরানের পতাকার ছবি ওয়েবসাইটের ডিসপ্লেতে আপলোড করা হয়।

ইরানিয়ান হ্যাকার গ্রুপ পরিচিতিঃ 
সাইবার জগতে ইরানিয়ান হ্যাকারদের বেশ পরিচিতি রয়েছে। ২০১০ সাল থেকেই বেশ কিছু ইরানিয়ান হ্যাকার গ্রুপ হ্যাকিং কমিউনিটিতে দাপটের সাথে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।
এর মধ্যে ইরানিয়ান সাইবার আর্মি, পার্সিয়ান হ্যাকার গ্রুপ, শিল্ড ইরান, আসিয়ানে ডিজিটাল সিকিউরিটি টিম অন্যতম। নিষ্ক্রিয় হয়ে যাওয়া ইরানিয়ান সাইবার আর্মির সদস্যদের সাথে বাংলাদেশ, ভারত এবং পাকিস্তানের হ্যাকারদের সাথে বেশ সখ্যতা ছিলো। তবে সম্প্রতি গত তিন বছর সময়ে ফসফরাস, যার আরেক নাম ‘এপিটি ৩৫’ হ্যাকার টিমটি আন্তর্জাতিক ভাবে ইরানের হয়ে হ্যাকিং কার্যক্রম পরিচালিত করে আসছে। 


আমেরিকান হ্যাকার গ্রুপ পরিচিতিঃ 
বলা হয়ে থাকে ইন্টারনেটের দুই তৃতীয়াংশ নিয়ন্ত্রণ যুক্তরাষ্ট্রের কাছেই আছে। তাই সরকারি ভাবে আমেরিকা ইন্টারনেট জগতে অনেক শক্তিশালী। সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তা এডওয়ার্ড স্নোডেন ফাঁস করে দিয়েছেন যে প্রিজম কর্মসূচির আওতায় ফেসবুক, গুগল, মাইক্রোসফট, ইয়াহু, ইউটিউব এবং অ্যাপলসহ বিভিন্ন ইন্টারনেট জায়ান্ট প্রতিষ্ঠানকে না জানিয়েই তাদের সার্ভারে সরাসরি প্রবেশ করে তথ্য সংগ্রহ করে আমেরিকার ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সি (এনএসআই) ও ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই)। তাই রাষ্ট্রীয় ভাবে আমেরিকা হ্যাকিং দিকেও অনেক শক্তিশালী, তবুও কিছু হ্যাকার গ্রুপ স্বতন্ত্র ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এর মধ্যে ডিসি লিকস, হংকার ইউনিয়ন, এনন কোড, লাজারুস অন্যতম।

বর্তমান সাইবার যুদ্ধের অবস্থাঃ 
ইতিমধ্যেই ইরান সাইবার সিকিউরিটি গ্রুপ হ্যাকার্স মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ডিপোজিটরি লাইব্রেরি প্রোগ্রামের সরকারি ওয়েবসাইট হ্যাক করেছে। ওয়েবসাইটটি এখনো অচল অবস্থায় আছে। লিংকঃ fdlp.gov
মোসলেম নামক একটি হ্যাকার দল ওয়াশিংটন ডিসি অফিসের সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরের অফিশিয়াল ওয়েবসাইট ৬ টি পৃথক সরকারি দপ্তরে হামলা চালিয়েছে। শিল্ড ইরান নামের একটি হ্যাকার দল ও এই সাইবার যুদ্ধে অংশ নিয়ে একটি যুক্তরাষ্ট্র সরকারি ওয়েবসাইট হ্যাক করেছে। সেই সাথে ব্যাংক অফ আমেরিকার একটি ব্লগ পোর্টাল সহ আরো কিছু ওয়েবসাইট হ্যাক করেছে শিল্ড ইরান।
উল্লেখ্য, এখনো পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের হ্যাকারদের থেকে পাল্টা কোন আক্রমনের খবর পাওয়া যায় নি।

ইরানের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সাইবার যুদ্ধের সূচনা এবং ইতিহাসঃ 
ইরান এবং যুক্তরাষ্ট্র কয়েকবার সাইবার যুদ্ধে একে অপরের প্রতিপক্ষ হয়েছিলো। ২০১০ এর জুন মাসে ইরানের নিউক্লিয়ার গবেষণাগারে সাইবার এট্যাক চালানো হয়। ভাইরাসের নাম ছিলো 'স্টাক্সনেট'। এট্যাকটটি চালানো হয়েছিলো আমেরিকা এবং ইসারাইল এর যৌথ উদ্যোগে। সেই সময়ে স্টাক্সনেট প্রায় ১০০০ নিউক্লিয়ার সেন্ট্রিফিউজ নষ্ট করে দেয়। আরেকটি রিপোর্টের মতে, ইরানের প্রায় ৬০ হাজার কম্পিউটার এই স্টাক্সনেট ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হয়। 
২০১২ সালে একটি রিপোর্টে বলা হয় ইরানের গভর্নমেন্ট দ্বারা আমেরিকা-ইসরাইল এর ব্যাংক এ সাইবার এট্যাক চালানো হয়। আর এটাকেই বলা হয় ইরান আমেরিকার সাইবার যুদ্ধের সূচনা।
সর্বশেষ ২০১৯ সালের জুন মাসে ইরান এক হামলায় ২৪০ মিলিয়ন ডলারের আমেরিকান ড্রোন ভুপাতিত করে। যার পরিপ্রেক্ষিতে আমেরিকা ইরানিয়ান মিসাইল নিয়ন্ত্রণ করার সামরিক কম্পিউটার সিস্টেমে সাইবার আক্রমন পরিচালনা করে।

ইরানিয়ান হ্যাকারদের সম্ভাব্য পরবর্তী পদক্ষেপঃ 
আল-কুদস ফোর্সের প্রধান ও বিপ্লবী গার্ডস বাহিনীর কমান্ডার মেজর জেনারেল কাসেম সোলাইমানি নিহত হওয়ার ঘটনার আগেই যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন নিয়ে ইরানিয়ান হ্যাকারদের কিছু কার্যক্রম পরিলক্ষিত হয়েছিলো। ২০১৯ সালের অগাস্ট থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে ৩০ দিনে ইরানিয়ান হ্যাকার গ্রুপ ফসফরাস দুই হাজার সাতশত বার বিভিন্ন ইমেইল অ্যাকাউন্টের পরিচয় জানার চেষ্টা চালিয়েছে। এরপর দলটি ২৪১টি ইমেইল অ্যাকাউন্টের উপর আক্রমণ চালায়।
“এসব অ্যাকাউন্টধারীর মধ্যে রয়েছে নির্বাচনী প্রচারণা সংশ্লিষ্ট লোকজন, সাবেক ও কর্মরত মার্কিন সরকারী কর্মকর্তা, আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিষয়ে কাজ করেন এমন সাংবাদিক এবং প্রভাবশালী প্রবাসী ইরানী ব্যক্তি”
বলা যেতেই পারে ইরানিয়ান হ্যাকারদের পরবর্তী পদক্ষেপ থাকবে মার্কিন নির্বাচনকে ঘিরেই।

যুক্তরাষ্ট্রের হ্যাকারদের সম্ভাব্য পরবর্তী পদক্ষেপঃ 
রাশিয়া এবং ইরানিয়ান হ্যাকারদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক না থাকলেও বর্তমান যুদ্ধের বিষয়টি আন্তর্জাতিক একটি ইস্যু হওয়ার কারনে ইরানের সাথে রাশিয়ান এবং চাইনিজ হ্যাকাররা যোগ দিতে পারে। রাষ্ট্রীয় ভাবে নির্বাচন এবং আন্তর্জাতিক অনেক বিষয় জড়িত থাকার দরুণ সরকারি কিংবা বেসরকারি ভাবে আমেরিকার পক্ষ থেকে পাল্টা সাইবার আক্রমন হওয়ার সম্ভাবনা অনেক ক্ষীণ। 

সম্ভাব্য ফলাফলঃ 
যেহেতু সাইবার যুদ্ধটা শুরু হয়েছে জেনারেল কাসেম সোলাইমানি নিহত হওয়ার ঘটনায় তাই যুক্তরাষ্ট্র কিভাবে ইরানকে বিষয়টা নিয়ে সমাধান করতে পারে তার উপর সাইবার যুদ্ধের ফলাফল নির্ভর করছে। তবে ভুক্তভোগী দেশ হিসেবে সাইবার যুদ্ধ শুরু করা ইরান চলমান সাইবার আক্রমনে যুক্তরাষ্ট্র থেকে এগিয়ে থাকবে।

নিহত হওয়ার ঘটনায় বাংলাদেশের হ্যাকারদের সাইবার যুদ্ধের ইতিহাসঃ 
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া টপকানোর সময় ভারতীয় সীমান্ত-রক্ষীদের গুলিতে বাংলাদেশী কিশোরী ফেলানি খাতুনের মৃত্যুর ঘটনায় ২০১১ সালে বাংলাদেশের হ্যাকাররা ভারতের বিপক্ষে সাইবার যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলো। উক্ত সাইবার যুদ্ধে ভারতীয় ৩০ হাজারেরও অধিক ওয়েবসাইট আক্রমনের শিকার হয়েছিলো।

চ্যড হারলি, স্টিভ চ্যান ও বাংলাদেশি বংশদ্ভুত জাওয়েদ করিম ইউটিউবকে মূলত ডেটিং ওয়েবসাইট হিসেবে তৈরি করেন।  তেমনই ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম, টুইটার, উইকিপিডিয়ার কার্যক্রম ছিল বর্তমান সময়ের থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। 

ইউটিউব ছিল ডেটিং ওয়েবসাইটঃ 

বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ইউটিউব। কিন্তু সাইটটির তিন প্রতিষ্ঠাতা চ্যড হারলি, স্টিভ চ্যান ও বাংলাদেশি বংশদ্ভুত জাওয়েদ করিম ইউটিউবকে মূলত ডেটিং ওয়েবসাইট হিসেবে তৈরি করেন। তারা চেয়েছিলেন ব্যবহারকারীরা তাদের সম্পর্কে ভিডিও আপলোড করবেন এবং এর মাধ্যমে তারা তাদের পার্টনার খুঁজে নেবেন। কিন্তু প্রথম কয়েক মাসে কোনো নারীই তাদের ভিডিও আপলোড করেননি। এমনকি ভিডিও আপলোডের শর্তে ২০ ডলার দেওয়ার প্রস্তাবেও তাদের পরিকল্পনা সফলতার মুখ দেখেনি। তাই বাধ্য হয়েই উদ্যোক্তারা সব ধরনের ভিডিও আপলোডের জন্য ইউটিউবকে উন্মুক্ত করে দেয়।

ফেব্রুয়ারি ২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠিত এই প্রতিষ্ঠানটির পেছনে ছিলেন মূলত তিনজন প্রযুক্তিপ্রণেতা, পেপ্যাল প্রতিষ্ঠানের তিন প্রাক্তন চাকুরীজীবি চ্যাড হারলি, স্টিভ চ্যান আর বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত জাভেদ করিম। তারা একসঙ্গে চাকরি করতেন। মাত্র কয়েক মাসের চেষ্টায় তৈরি হওয়া ইউটিউব ভিডিও ফাইলের আকার ছোট করে প্রদর্শনের বিশেষ প্রযুক্তির জন্য বিশ্বে অনন্য সাধারণ অবস্থান নিয়েছে। এখন ইউটিউবে প্রতিদিন কমপক্ষে ৩ বিলিয়ন বার ভিডিও দেখা হয়। প্রতি মিনিটে আপলোড হয় ৪৮ ঘণ্টার ভিডিও। ১ কোটি ১৫ লাখ ডলারে নির্মাণ করা ইউটিউব এক বছরের মধ্যেই ১৬৫ কোটি ডলারে কিনে নেয় গুগল। ইউটিউব প্রতিষ্ঠাতা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত জাওয়াদ করিম সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক। ১৯৭৯ সালে পূর্ব জার্মানির মার্সবার্গে জন্মগ্রহণ করেন জাভেদ করিম। তার বাবা বাংলাদেশের প্রবাসী বিজ্ঞানী নাইমুল করিম ও মাইউনিভার্সিটি অব মিনেসোটার বায়োকেমিস্ট্রির বিজ্ঞানী ক্রিস্টিনা করিম। নাইমুল করিম ১৯৯২ সালে সপরিবারে আমেরিকা পাড়ি দেন। ছোট বেলা থেকেই জাওয়াদ ছিলেন একটু চুপচাপ প্রকৃতির। কিন্তু চুপচাপ হলে কী হবে? তার মাথার মধ্যে সবসময় নানান ধরণের ক্রিয়েটিভ চিন্তাভাবনা ঘুরপাক খেত। ছোটবেলা থেকেই আবিষ্কারের নেশা তাকে পেয়ে বসতো, আর তার ফলাফল আজকের এই ইউটিউব। জাওয়াদ করিমের ১৩ বছর বয়স পর্যন্ত বেড়ে ওঠা জার্মানিতে হলেও পরবর্তীতে পড়ালেখা করেন আমেরিকায়। জাভেদ স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার বিজ্ঞানে পড়াশোনা করেন। কম্পিউটার বিজ্ঞানে তার স্নাতক ডিগ্রি নিয়েছিলেন ২০০৫ সালে। জন্ম ও বেড়ে ওঠা:৯৭৯ সালে পূর্ব জার্মানির মার্সবার্গে জন্মগ্রহণ করেন ইউটিউব প্রতিষ্ঠাতা জাভেদ করিম। তার বাবা বাংলাদেশের প্রবাসী বিজ্ঞানী নাইমুল করিম ও মাইউনিভার্সিটি অব মিনেসোটার বায়োকেমিস্ট্রির বিজ্ঞানী ক্রিস্টিনা করিম। নাইমুল করিম ১৯৯২ সালে সপরিবারে আমেরিকা পাড়ি দেন। ছোট বেলা থেকেই জাওয়াদ ছিলেন একটু চুপচাপ প্রকৃতির। কিন্তু চুপচাপ হলে কী হবে? তার মাথার মধ্যে সবসময় নানান ধরণের ক্রিয়েটিভ চিন্তাভাবনা ঘুরপাক খেত। ছোটবেলা থেকেই আবিষ্কারের নেশা তাকে পেয়ে বসতো, আর তার ফলাফল আজকের এই ইউটিউব। জাওয়াদ করিমের ১৩ বছর বয়স পর্যন্ত বেড়ে ওঠা জার্মানিতে হলেও পরবর্তীতে পড়ালেখা করেন আমেরিকায়। জাভেদ স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার বিজ্ঞানে পড়াশোনা করেন। কম্পিউটার বিজ্ঞানে তার স্নাতক ডিগ্রি নিয়েছিলেন ২০০৫ সালে।
Photo source: wikipedia
ইউটিউবের শুরুর গল্প:কম্পিউটার সায়েন্সে পড়ার পাশাপাশি ২০০৪ সালে পেপ্যালে চাকরি করার সময় চ্যাড হার্লি এবং স্টিভ চেনের সাথে বন্ধুত্ব গড়ে তোলেন। স্টিভ ছিলেন একজন কম্পিউটার সায়েন্সের ছাত্র। হার্লি মূলত পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিজাইন বিভাগের ছাত্র ছিলেন। তিন জনই নতুন কিছু করতে চাইতেন। এমনকিছু করতে চাইতেন, যাতে পুরো পৃথিবী অবাক হয়ে যায়। কিন্তু হঠাৎ করে তাদের মাঝে যোগাযোগ কম হওয়ায় সেই পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়িত করতে একটু বেশি সময় লেগে যায়। ছোট বেলা থেকেই 
ইউটিউব প্রতিষ্ঠাতা জাভেদ করিম ছিলেন একটু চুপচাপ প্রকৃতির। কিন্তু চুপচাপ হলে কী হবে? তার মাথার মধ্যে সবসময় নানান ধরণের ক্রিয়েটিভ চিন্তাভাবনা ঘুরপাক খেতো। ছোটবেলা থেকেই আবিষ্কারের নেশা তাকে পেয়ে বসতো, আর তার ফলাফল আজকের এই ইউটিউব।
 আইডিয়া হলো, অসামান্য প্রতিভাবান দুজন বন্ধু ও আছে, কিন্তু এরকম একটা সাইট চালাইতে অনেক টাকা দরকার, সেজন্য প্রয়োজন এমন কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান, যিনি টাকা ইনভেস্ট করবেন। ‘সেকুয়া ক্যাপিটাল’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান ১১.৫ মিলিওন ডলার ইনভেস্ট করলো। ব্যস! তারা শুরু করে দিলেন তাদের কাজ। ২০০৫ সালের ১৪ই ফেব্রুয়ারি তারা youtube.com ডোমেইনটি নিবন্ধন করলেন। তিন প্রকৌশলী কয়েক মাসের মধ্যে এর কাজও শেষ করে ফেললেন। নভেম্বর মাসে ‘ব্রডকাস্ট ইওরসেলফ’ শ্লোগানে অফিশিয়ালি উন্মুক্ত করা হলো ইউটিউব সাইটটি। ইউটিউবে আপলোড করা প্রথম ভিডিও: ইউটিউবের ইতিহাসে সর্বপ্রথম ভিডিওটি আপলোড করেছিলেন জাভেদ। সেটা ২০০৫ সালের ২৩ এপ্রিলের ঘটনা। ওইদিনই তিনি প্রথম তার ইউজার একাউন্ট ‘jawed’ তৈরি করেন। সেখানে ‘Me at the zoo’ নামের একটা ১৯ সেকেন্ডের পরীক্ষামূলক ভিডিও সম্প্রচার করা হয়। যা ছিল সান ডিয়াগোর এক চিড়িয়াখানায়, বয়স্ক হাতি মেসার সামনে। আর ভিডিওটি শ্যুট করেছিলেন তারই হাইস্কুলের বন্ধু ইয়াকভ লাপিস্কি। যিনি এখন টলেডো ইউনিভার্সিটির কেমিক্যান অ্যান্ড এনভয়রমেন্টাল ইঞ্জিনিয়রিংয়ের অধ্যাপক । ভিডিও কোয়ালিটি একটু বাজেই বলা যায়। অবশ্য আমার তিন বছর আগের ফোনের ক্যামেরার কোয়ালিটিই বাজে, আর ১৩ বছর আগের ভিডিও কোয়ালিটি তো খানিকটা বাজে হওয়াটাই স্বাভাবিক(!) অক্টোবর ২০১৮ পর্যন্ত এই ভিডিওর ভিউ ছাড়িয়েছে ৫৫ মিলিয়ন, আর কমেন্ট ৯১৯,০০০! এখন ইউটিউবে প্রতি মিনিটে ১০০ ঘন্টার ও বেশী ভিডিও আপলোড করা হয় !!!!! ভিডিও লিংক: https://youtu.be/jNQXAC9IVRw কর্মজীবন: ইউটিউব প্রতিষ্ঠার পর জাওয়াদ করিম আবারো স্ট্যানফোর্ডে কম্পিউটার সায়েন্সে পড়াশোনা শুরু করেন। ইউটিউবের পরামর্শক হিসেবে তখন তিনি দায়িত্বরত ছিলেন। যখন ওয়েবসাইটটি পরিপূর্ণভাবে লঞ্চ করা হয়, তখন নিজেকে একটু দূরে সরিয়ে রাখেন জাওয়াদ। নিজের পড়াশোনায় বেশি ফোকাস করে প্রতিষ্ঠানটির অনানুষ্ঠানিক পরামর্শক হিসেবে বাইরে থেকে কাজ করতেন তিনি। তিনি ২০০৭ সালের ১৩ই মে ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি বক্তৃতা দেন যেখানে তিনি তাঁর জীবনের উত্থান পতন এবং ইউটিউব তৈরির বিষয়টি তুলে ধরেন। বক্তৃতাটি হলো- “সবারই সম্ভবত ইউটিউব নিয়ে পছন্দ-অপছন্দের মিশ্র অনুভূতি আছে। কারণটা মনে হয় ইউটিউব নিজেই। একদিকে ইউটিউব যেমন প্রত্যেককে রাত জেগে নতুন সব ভিডিও দেখার সুযোগ করে দিচ্ছে। ঠিক উল্টোভাবে বলা যায়, রাতের পর রাত এসব ভিডিও দেখার কারণে ইউটিউব তোমাদের মূল্যবান সময় নষ্ট করছে। আমি এ সুযোগে, ইউটিউবের কারণে যাদের সিজিপিএ গ্রেড কমে গেছে তাদের জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি। অনেকে হয়তো জেনে খুশিই হবে যে ইউটিউব তোমাদের থেকে আমার বেশি সময় নষ্ট করেছে! যে কারও থেকে বেশি সময় ভিডিও দেখার জন্য বেশি সময় নষ্ট হয়েছে। অনেকে খেয়াল করেছ, বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ডিগ্রি প্রদান অনুষ্ঠানে যেসব বক্তা আসেন তাদের মধ্যে আমি সর্বকনিষ্ঠ। এর ভালো-মন্দ দুটো দিকই আছে। খারাপ দিক হলো, বয়সের কারণে আমি তোমাদের জীবন সম্পর্কে গভীর কোনো দর্শনের ধারণা দিতে পারব না। না পারার কারণ হিসেবে বলা যায় আমি নিজেই সেই ধারণা খুঁজে বেড়াচ্ছি। ভালো দিক হলো তোমরা এবং আমি বয়সে একই প্রজন্মের। তার মানে দাঁড়ায়, আমি যে সুযোগ পেয়েছি, যা শিখতে পেরেছি, তা এখনো প্রয়োগ করার সুযোগ আছে। তিন বছর আগে আমি যে সুযোগ পেয়েছি, যেসব ধারণা প্রয়োগ করেছি তা তোমরা এখনো একইভাবে প্রয়োগ করার সুযোগ ও সময় পাবে।
ইউটিউব প্রতিষ্ঠাতা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত জাওয়াদ করিম

 মিনেসোটার হাইস্কুলে পড়ার সময় আমি পৃথিবীর প্রথম জনপ্রিয় ইন্টারনেট ওয়েব ব্রাউজার মোজাইকের কথা শুনি এবং ব্যবহারের সুযোগ পাই। আমি ম্যাপ নিয়ে ইলিনয় খুঁজে বের করি এবং খেয়াল করি জায়গাটা মিনেসোটা থেকে বেশি দূরে নয়। তখনই আমার মাথায় নতুন চিন্তা ঢুকে গিয়েছিল। জনপ্রিয় ওয়েব ব্রাউজার যদি আমারই বাড়ির আঙিনার লোকজন উদ্ভাবন করে, তাহলে আমি অন্য কোথাও কেন যাব? সেই সময় আমি কোনো চিন্তা না করেই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি, আমাকে ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তেই হবে। আমি হাইস্কুলের পড়াশোনা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করি। আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে অপেক্ষায় ছিলাম কর্তৃপক্ষের চিঠির জন্য। খুব দ্রুতই আমি উত্তর পাই, কিন্তু সে উত্তর ছিল আমার জন্য হতাশাজনক। আমাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বলা হয়, কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগে আমি ভর্তি হতে পারব না। ওই বিভাগে শিক্ষার্থীর সংখ্যা পূর্ণ হওয়াতে আমার ভর্তির সুযোগ নেই। কিন্তু আমি সিরামিকস প্রকৌশল বিভাগে ভর্তির সুযোগ পাব। আমি বলতে চাই না, সিরামিকস বা মৃৎশিল্পের কোনো ভবিষ্যৎ নেই কিন্তু আমি তো এর জন্য আবেদন করিনি, স্বপ্ন দেখিনি। পুরোপুরি হতাশ হয়েছিলাম আমি। তো আমি তখন কী করতে পারি? আমি পুনরায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে একটি দীর্ঘ চিঠি লিখি এবং কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত পুনরায় বিবেচনা করা যায় কি না তা জানতে চাই। আমি সেই চিঠিতে লিখেছিলাম, ‘কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ থাকবে আমার আবেদনপত্রের কোনো বিষয়ই যেন উপেক্ষা না করা হয়। আমি নিশ্চয়তা দিতে পারি আমি কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগে পড়ার জন্য আগ্রহী এবং উচ্চাকাঙ্ক্ষী।’ আমার আবেদন পুনরায় বিবেচনা করা হয় এবং আমি কম্পিউটার বিজ্ঞানে পড়ার সুযোগ পাই। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের আমার প্রথম শিক্ষা ছিল কোনো কিছুর প্রতি নাছোড়বান্দার মতো লেগে থাকলে তা চূড়ান্ত ফল আনবেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বছরেই আমি এক প্রতিষ্ঠিত ইন্টারনেট ভিত্তিক অর্থ লেনদেনের কোম্পানিতে চাকরির সুযোগ পাই। মনে হচ্ছিল, চাকরিটা আমার জন্য বড় একটা সুযোগ। আমি বুঝে উঠতে পারছিলাম না পড়াশোনা বাদ দিয়ে কোম্পানিতে যোগ দেওয়ার সুযোগটা গ্রহণ করা ঠিক হবে কি না? আমি তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত না নিয়ে দুসপ্তাহ সময় নিই। পরে পড়াশোনায় বিরতি দিয়ে ক্যালিফোর্নিয়াতে পেপ্যাল সদর দপ্তরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। আমার মতে, যখন ঝুঁকি গ্রহণের সুযোগ পাবে তা অবহেলা করো না। ২০০৪ সালের ডিসেম্বরে ভারত মহাসাগরে সুনামি আঘাত আনে। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ধারণ করা সুনামির ভিডিওগুলো খুব দ্রুত গতিতে ইন্টারনেট ভুবনে ছড়িয়ে পড়ে। সে সময় ইন্টারনেটে কোনো সক্রিয় সাইট ছিল না, যেখান থেকে ভিডিওগুলো সহজেই খুঁজে পাওয়া যায়, দেখা যায়। এলোমেলোভাবে বিভিন্ন সাইটে অপরিকল্পিতভাবে ভিডিওগুলো সংরক্ষণ করা হয়, ভিডিও শেয়ার করার কোনো ভালো সাইট ছিল না। ই-মেইলেও সংযুক্ত করে ভিডিওগুলো পাঠানো যেত না। সবচেয়ে বড় সমস্যা ছিল ভিডিওগুলো দেখার জন্য তোমাকে প্রথমেই একটি ভিডিও প্লেয়ার ইন্সটল করতে হতো। ইন্সটলের পর সবচেয়ে বড় কাজ ছিল বাড়ির লোকজনকে তা চালানো শেখানো। ইন্টারনেটে ভিডিও দেখার এই সমস্যাগুলো সমাধানের উপযুক্ত সময় ছিল তখন। সুনামির দুই মাসের মধ্যেই ২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে আমি ও পেপ্যালের দুজন সহকর্মী ভিডিও শেয়ার ও সংরক্ষণের একটি ওয়েবসাইট তৈরির পরিকল্পনা করি। আমরা ১৪ ফেব্রুয়ারি ভ্যালেন্টাইনের দিনে কাজ শুরু করি। ভ্যালেন্টাইনের দিন বলে কি কাজ বন্ধ থাকবে নাকি? এটাও তো অন্য একটা সাধারণ দিনের মতোই, তাহলে সেদিনই নয় কেন? ২৩ এপ্রিল ইউটিউব ডট কম নামের ওয়েবসাইট আমরা উন্মুক্ত করি। শুরুর দিকে আমাদের ওয়েবসাইট খুব কম জনই ব্যবহার করছে। অন্যদের আগ্রহ বাড়ানোর জন্য আমরা সাইটটিকে নতুন ধরনের ডেটিং সাইট বলে প্রচার করি। আমরা একটি স্লোগানও ঠিক করি: ‘টিউন ইন, হুক আপ’। আমরা কিছু আসল ডেটিং ভিডিও দেখে হতাশ হয়ে উঠেছিলাম। তাই আমরা এখানে সব ধরনের ভিডিও আপলোডের জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠি। আমরা লস অ্যাঞ্জেলেস ও লাস ভেগাসের মেয়েদের উৎসাহিত করলাম আমাদের সাইটে ভিডিও আপলোডের জন্য। আমরা প্রতি ভিডিওর জন্য তাদের ২০ ডলার পুরস্কার প্রদানের ঘোষণা করলাম। আমাদের এই ঘোষণায় কেউ সাড়া না দিলে পুরস্কার ঘোষণা মাঠে মারা যায়! আমরা ওয়েবসাইট নিয়ে নতুন চিন্তা শুরু করলাম। পরে জুন মাসেই আমরা আমাদের ওয়েবসাইটে অনেক পরিবর্তন আনলাম। সাধারণ একটা রূপ দেওয়ার চেষ্টা করলাম, যেন সব ব্যবহারকারী খুব সহজেই এটি ব্যবহার করতে পারে। প্রতিষ্ঠার ১৮ মাসের মধ্যেই আমাদের ওয়েবসাইট নিয়ে আমরা আলোচিত হই। সাধারণ মানুষের কাছে আমরা খবরের শিরোনাম হই। তাদের অনেকের জিজ্ঞাসা ছিল, কীভাবে এ ধরনের আইডিয়া আমরা কোথা থেকে পেলাম। আমি তাদের সব সময় একটাই কথা বলি। চারদিকে সব সময়ই মেধাবী মানুষ থাকে, খুঁজে বের করতে হয় তাদের।
 তোমরা যখন এই হল থেকে বের হয়ে যাবে, তখন একটা কথাই মনে রাখবে। পৃথিবী তোমার জন্য অপেক্ষা করছে নতুন কোনো বড় উদ্যোগ সুযোগ সৃষ্টির জন্য। সবাইকে অভিনন্দন।
সূত্রঃ ইন্টারনেট 
টুইটারের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জ্যাক ডরসির টুইটার অ্যাকাউন্ট কিছু সময়ের জন্য হ্যাকড হয়েছিল। ‘চাকলিং স্কোয়াড’ নামের একটি হ্যাকার দল জ্যাক ডরসির অ্যাকাউন্ট হ্যাক করার দাবি করেছে। ৪০ লাখের বেশি অনুসারী হয়েছে ওই প্রোফাইলে। হ্যাকড হওয়ার পর ওই অ্যাকাউন্ট থেকে অত্যন্ত আপত্তিকর এবং বর্ণবাদী মন্তব্য করা হয়। ওই প্রোফাইল প্রায় ১৫ মিনিট হ্যাকারদের দখলে ছিল বলে বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
জ্যাক ডরসি - টুইটার।

টুইটার কর্তৃপক্ষ বলেছে, তাদের নিজস্ব সিস্টেমে ঢুকতে পারেনি হ্যাকাররা। এর জন্য একটি মোবাইল অপারেটর দায়ী। তবে ওই মোবাইল অপারেটরের নাম প্রকাশ করেনি তারা।
টুইটারের এক বিবৃতিতে বলা হয়, মোবাইল অপারেটরের নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণের সুযোগে টুইটার অ্যাকাউন্টের সঙ্গে থাকা ফোন নম্বর আগে হ্যাক করা হয়। এতে অননুমোদিত ব্যক্তি ফোন নম্বর থেকে টেক্সট বার্তার মাধ্যমে টুইট করতে পেরেছে। এ সমস্যা এখন সমাধান করা হয়েছে।
টুইটারের একটি সূত্র বলেছে, হ্যাকারা ‘সিমসোয়াপিং’ বা ‘সিমজ্যাকিং’ পদ্ধতি কাজে লাগিয়ে জ্যাক ডরসির অ্যাকাউন্ট নিয়ন্ত্রণে নেয়। এ পদ্ধতিতে বর্তমান ফোন নম্বরকে নতুন একটি সিমকার্ডে স্থানান্তর করা হয়। অনেক সময় মোবাইল অপারেটরের কোনো কর্মীকে ঘুষ দিয়ে বা ফাঁদে ফেলে এ ধরনের কাজ করতে পারে দুর্বৃত্তরা। ডরসির ক্ষেত্রে মোবাইল নম্বর নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পর টেক্সট বার্তা ব্যবহার করে সরাসরি টুইট পোস্ট করতে পেরেছে হ্যাকাররা।
মোবাইল ফোন থেকে টুইট করার অপশনটি এখনো চালু রেখেছে টুইটার। কারণ, উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ডেটার দাম বেশি হওয়ায় সেখানে বার্তার মাধ্যমেই টুইট করার সুবিধাটি রয়েছে।
জ্যাক ডরসির অ্যাকাউন্ট থেকে করা একটি টুইটে লেখা হয়েছে, তাদের প্রধান কার্যালয়ে বোমা পেতে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া হলোকাস্ট নিয়ে আপত্তিকর টুইট করা হয়।
হ্যাকাররা একটি ওয়েবসাইট চালু করে সেখানে হ্যাকিং নিয়ে আলোচনা ও কৌতুক শুরু করে। পরে অবশ্য সেটি বন্ধ করে দিয়েছে।
সম্প্রতি চাকলিং স্কোয়াডের পক্ষ থেকে হাই-প্রোফাইল বেশ কয়েকটি টুইটার অ্যাকাউন্ট হ্যাক করার দাবি করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বিউটি ভ্লগার জেমস চার্লস, ইউটিউবার ডেসমন্ড অ্যামোফা প্রমুখ।
টুইটারের বাইরে থেকে কেউ তাদের নিরাপত্তা ভেঙে ফেলছে। এ ঘটনা তাদের জন্য বিব্রতকর। টুইটারে বিশ্বের বড় বড় রাজনৈতিক নেতার প্রোফাইল রয়েছে। সূত্রঃ প্রথম আলো।

Ethical Hacking Conference, Dhaka