Showing posts with label সফলতার গল্প. Show all posts
Showing posts with label সফলতার গল্প. Show all posts

জেএসসি ও এসএসসি কোনোটাতেই জিপিএ ৫ জোটেনি উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র আহমেদ নাফিস ফারহানের। তবে থামেনি তার বিজয় রথ। বিজ্ঞানের প্রতি আগ্রহ তাকে এনে দিয়েছে দেশি-বিদেশি অনেক পুরস্কার। 

আগামী ডিসেম্বরেই নেদারল্যান্ডসে হতে যাচ্ছে আন্তর্জাতিক জুনিয়র সায়েন্স অলিম্পিয়াড। বাংলাদেশ দলে নাফিসও আছে। গত বছর ইন্দোনেশিয়ায় হয়ে যাওয়া এ উৎসবেও সে গিয়েছিল। বাকি পাঁচজনের মতো সে-ও এনেছিল ব্রোঞ্জ পদক।
বড় হয়ে অনেকেই হতে চায় মা-বাবার মতো। নাফিসও ব্যতিক্রম নয়। ছোটবেলা থেকেই কাছ থেকে দেখার সুযোগ হয় প্রকৌশলী বাবার কাজকর্ম। বাবার অফিসে নানা যন্ত্রপাতি দেখে অবাক হতো। তখনই যন্ত্রের প্রতি ভালোবাসা জন্মায়। ফেলে দেওয়া এটা-ওটা দিয়ে বানিয়ে ফেলত মজার কিছু। সিনেমায় তার প্রিয় চরিত্র আয়রনম্যান।
হতে চায় টনি স্টার্কের মতোই। আপাতত হাতের ইশারায় বাতি অন-অফ করতে নিজের মতো করে একটা নকশা সে বানিয়েছে। এটা বানাতে নাফিস ব্যবহার করেছে এইচসি-এসআর০৪ ও এমএইচ-বি সেন্সর। মাদারবোর্ড হিসেবে আছে আরদুইনো-ইউএনও। প্রথমে ‘সোনার’ সেন্সর দুটি ব্যবহারকারীর হাতের অবস্থান বের করবে। সেন্সরগুলো একটি তরঙ্গ পাঠাতে থাকবে হাতে। সেটা আবার প্রতিধ্বনি তৈরি করে। এই প্রতিধ্বনির সময়ের ওপর নির্ভর করে তৈরি হয় নানা প্যাটার্ন তথা বিন্যাস। একেক প্যাটার্নের সঙ্গে মিল করে দেওয়া যায় একেক কমান্ড। এভাবেই মোশন সেন্সর কাস্টমাইজেশন করেছে নাফিস। এটা নিয়ে পরে আরো বড় কিছু করার ইচ্ছা আছে ওর।

ফটোগ্রাফিও তার বড় শখ। আর এর জন্য ক্যামরার খুঁটিনাটিও তার নখদর্পণে। যান্ত্রিক পরিবর্তন ঘটিয়ে ক্যামেরায় এমন এক সিস্টেম সেট করেছে, যা দিয়ে নির্দিষ্ট সময় বিরতিতে দীর্ঘ সময় ছবি তুলতে পারা যায়। এটা ক্যামেরার প্রচলিত টাইমল্যাপস মোডের একটি কাস্টমাইজেশন রূপ। জেস্টার কন্ট্রোলারের মতো এতেও একই ধরনের সেন্সর ও বোর্ড ব্যবহার করেছে নাফিস। নাফিস জানাল, ‘প্রথমে একটি আইআর রিসিভার ব্যবহার করে ক্যামেরা রিমোটের সিগনাল ডিকোড করি। তারপর রিমোটের শাটার ক্লিকের কোডটাকে বদলে দিই। এতে ওই সিগনাল নির্দিষ্ট সময় পর পর ব্রডকাস্ট হয়। তারপর হার্ডওয়্যারে নতুন অ্যালগরিদম আপলোড করলেই কাজ হয়ে যায়। ’
নাফিস ও তার কাজ নিয়ে তার স্কুলের আইসিটি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘এখন ইন্টারনেট থেকে তথ্য নিয়ে অনেকে অনেক কিছু বানায়। অনেকে আবার হুবহু কপি করে। তবে কেউ আছে একটা কিছু দেখে পরে নিজের মতো করে কিছু বানিয়ে ফেলছে। তবে নাফিসের প্রজেক্টগুলো আলাদা। আমার মনে হয় না, ওর মতো করে কেউ এগুলো আগে করতে পেরেছে। ’
থ্রিডি মডেলিং সফটওয়্যার ব্যবহার করে নাফিসের বানানো গাড়ির নকশা

নাফিসের একাডেমিক ফলাফল নিয়ে বললেন, ‘বাইরের অনেক বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও দেখা যায়, শিক্ষার্থী নির্বাচন করে নির্দিষ্ট বিষয়ে শিক্ষার্থীর দক্ষতার ওপর ভিত্তি করে। আমি মনে করি না, ওর জিপিএ পাঁচহীন ফল তার ক্যারিয়ারে কোনো প্রভাব ফেলবে। ’
এদিকে গাড়িও ভালো লাগে নাফিসের। নিজের মতো করে গাড়ির নকশাও করে অবসরে। গণিতেও দখল তার। বাংলাদেশ ম্যাথ অলম্পিয়াড ২০১৫ ও ২০১৭-তে চট্টগ্রাম বিভাগে প্রথম রানার্স-আপ সে। কাঁচা নয় পদার্থবিজ্ঞানেও। বাংলাদেশ ফিজিকস অলিম্পিয়াড ২০১৫-তে সে বিভাগীয় পর্যায়ে প্রথম ও জাতীয় পর্যায়ে অষ্টম হয়েছে। বাদ যায়নি জ্যোতির্বিজ্ঞান। বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমি ও অ্যাস্ট্রোফিজিকস অলিম্পিয়াড ২০১৭-তেও প্রথম ১০ জনে ছিল তার নাম। প্রগ্রামিংয়েও সব্যসাচী। জাতীয় ও বিভাগীয় পর্যায়সহ প্রগ্রামিংয়ে রয়েছে সাতটি পুরস্কার। পাকা হাত আঁকাআঁকিতেও। ২০১৫ সালে চট্টগ্রাম বর্ণমেলায় চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছিল।
খেলাধুলায় প্রিয় দাবা। ২০১৫ সালে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, চট্টগ্রাম কেন্দ্রের ইনডোর গেমসে দাবায় চ্যাম্পিয়ন হয় সে। সম্প্রতি ব্রিটিশ কাউন্সিল আয়োজিত বিতর্ক প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয় তার দল।
ডিসেম্বরের জুনিয়র সায়েন্স অলিম্পিয়াডের প্রস্তুতি নিয়ে নাফিস জানাল, ‘গতবারের চেয়ে এবারের প্রস্তুতি ভালো। চেষ্টা করব দেশের জন্য ভালো কিছু করার। ’
নাফিসের পছন্দের বিষয় তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞান। এ নিয়ে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন তার। নাফিস জানায়, সবার মতো হয়তো তার মা-বাবাও চেয়েছিলেন তাঁদের ছেলে যেন গোল্ডেন ‘এ’ প্লাস পায়। কিন্তু একাডেমিক ফলের ক্ষেত্রে স্রোতের বিপরীতে চলা নাফিস তা পায়নি। এ নিয়ে বিন্দুমাত্র মাথাব্যথাও তার নেই। তার বাকি সব অর্জনে মা-বাবা দারুণ খুশি।  
গুগলের সিইওর বেতন বলে কথা!
গত বছরে কত টাকা বেতন পেয়েছেন তিনি? সবার জানার আগ্রহ থাকতেই পারে। তাঁর বেতনটা আকর্ষণীয় ও চোখ-ধাঁধানো, তাতে সন্দেহ নেই।গত বছরে তিনি পেয়েছেন ২০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা বাংলাদেশি টাকায় ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকার বেশি। তবে পুরোটা কিন্তু নগদ অর্থে বেতন হিসেবে পাননি পিচাই। এর মধ্যে ৬ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার বেতন আর বাকিটা শেয়ার হিসেবে তাঁর নামে জমা হয়েছে।এদিক থেকে হিসাব করলে বেতন হিসেবে ২০১৫ সালের চেয়ে তাঁর বেতন কিছুটা কমেছে। ২০১৫ সালে ৬ লাখ ৫২ হাজার মার্কিন ডলার বেতন পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ২০১৫ সালে স্টক অব শেয়ার হিসেবে তিনি পেয়েছিলেন মাত্র ৯৯ দশমিক ৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা ২০১৬ সালে এসে বেড়ে ১৯৮ দশমিক ৭ মার্কিন ডলার ছুঁয়েছে।

২০১৫ সালের আগস্ট মাসে গুগলের প্রধান নির্বাহীর দায়িত্ব নেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত সুন্দর পিচাই।
গত দেড় বছরের মধ্যে গুগলের মতো একটি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব সফলভাবে সামলানোর পাশাপাশি নতুন বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছেন পিচাই। তাঁর নতুন পদক্ষেপগুলোর প্রশংসা করেছে গুগলের বেতন-সংক্রান্ত কমিটি। গুগলের প্রধান নির্বাহী ল্যারি পেজ অ্যালফাবেট নামের প্রতিষ্ঠান খুলে ব্যবসার নতুন লক্ষ্য নির্ধারণে কাজ করেছেন। শুধু গুগলের দায়িত্ব রয়েছে পিচাইয়ের কাঁধে। তবে ইউটিউবের বিজ্ঞাপনী আয় বাড়ানো, ক্লাউড কম্পিউটিং, মুঠোফোনসহ নতুন ক্ষেত্রগুলোতে সফলতার সঙ্গে কাজ করছেন পিচাই। এসব উদ্যোগ থেকে আয় করতে শুরু করেছে গুগল। তারই প্রতিফলন ঘটেছে সুন্দর পিচাইয়ের বেতনে।
গত বছরে গুগলের হার্ডওয়্যার ও ক্লাউড ব্যবসা ৫০ শতাংশ বেড়ে ৩১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে।
মন এক দৈত্য, যাকে ছাড়া আজকের দিনে আমরা অচল
সময় যত এগোবে, আমাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রযুক্তির স্নেহচ্ছায়া আরওই বেশি-বেশি করে এসে পড়বে বলেই আশা। প্রযুক্তিকে উপকারী, আরও উপকারী করে তোলার এই কাজ বিশ্বজুড়ে হাতে গোনা যে তুখোড় মস্তিষ্করা চলেছেন অনলসভাবে, গর্বের সঙ্গে বলা যায়, তাদের অনেকেই ভারতীয়। বিশ্বাস না হলে একটা লিস্টি দেখি? ইন্দ্রা নুয়ি (PEPSICO), সত্য নাদেল্লা (MICROSOFT), রাজীব সুরি (NOKIA), শান্তনু নারায়ণ (ADOBE), রাকেশ কপূর(RECKITT BENCKISER), অজয়পালসিংহ বঙ্গা (MASTERCARD), সঞ্জয় মেহরোত্র (SANDISK),ফ্রান্সিসকো ডিসুজা (COGNIZANT)। এই মানুষগুলোর প্রত্যেকে ওই কোম্পানিগুলোর হর্তাকর্তা,এবং প্রত্যেকেই ভারতীয়। এই তালিকায় এক্কেবারে টাটকা সংযোজন চেন্নাইয়ের PICHAI SUNDARARAJAN।

সুন্দর সম্পর্কে সুন্দর তথ্য

১. সুন্দরের সিইও হওয়ার সঙ্গে-সঙ্গে গুগল চলে এসেছে ‘ALPHABET’ নামের বড়দা কোম্পানি ছাতার তলায়। গুগলের প্রতিষ্ঠাতা LARRY PAGE ও SERGEY BRIN থাকছেন অ্যালফাবেটের দায়িত্বে। অধীনস্থ গুগলের দায়িত্বে রইলেন সুন্দর।
২. তামিলনাড়ুর চেন্নাইয়ে সুন্দরের জন্ম ১৯৭২ সালে। ভীষণ সাধারণ পরিবারের সন্তান সুন্দর ছেলেবেলা থেকেই ছিলেন মেধাবী। সাতের দশকের ভারতের সেই সাধারণ পরিবারের অসাধারণ ছেলেটির আনুমানিক সম্পত্তির পরিমাণ আজ প্রায় ১৫০ মিলিয়ন ডলার!
৩. সহকর্মীদের কাছ থেকে জানা যায়, গভীর চিন্তায় ডুবে গেলেই নাকি পায়চারি করতে থাকেন সুন্দর। ঘরভর্তি লোক,মিটিং চলছে, এদিকে চিন্তিত মুখে ঘরের মধ্যেই পায়চারি করে বেড়াচ্ছেন সুন্দর, এই দৃশ্য আচমকা দেখতে পেলে তাই অবাক হওয়ার কিছু নেই।
৪. সুন্দরের বাবা ছিলেন ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। তিনবছর টাকা জমিয়ে তবে তিনি কিনতে পেরেছিলেন একটি স্কুটার। অর্থকষ্ট থাকলেও সুন্দর ও তাঁর ভাইয়ের লেখাপড়ার ব্যবস্থায় কিন্তু কোনওদিন কোনও অভাব হতে দেননি সিনিয়র সুন্দররাজন।
৫. বাবার কাছেই ছোটবেলায় সুন্দর শুনতেন, ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারদের কী-কী কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হয়।সেই শুনতে-শুনতেই নাকি প্রযুক্তির প্রতি সুন্দরের আগ্রহের জন্ম।
৬. নিজের হাইস্কুলে সুন্দর ছিলেন ক্রিকেট টিমের ক্যাপ্টেন। সেখান থেকে KHARAGPUR IIT-তে বিটেক, তারপর STANFORD UNIVERSITY থেকে এমএস, এবং অবশেষে Wharton School of the University of Pennsylvania থেকে এমবিএ।
৭. আইআইটি থেকে যখন স্ট্যানফোর্ডে যাচ্ছেন সুন্দর, তাঁর বাবাকে নিজের সেভিংস থেকে যে পরিমাণ টাকা বের করতে হয়েছিল, তা ছিল তাঁর পুরো একবছরের রোজগারের সমতুল্য।
৮. গুগলে যোগ দেওয়ার আগে সুন্দর ছিলেন McKinsey & Company-র ম্যানেজমেন্ট কনসালটিংয়ে।
৯. পিচাই গুগ্লে কাজ করছেন সেই ২০০৪ সালে। গোড়ায় তাঁর দায়িত্বে ছিল GOOGLE CHROME ও ক্রোম অপারেটিং সিস্টেমের প্রোডাক্ট ম্যানেজমেন্ট। সেইসঙ্গে GOOGLE DRIVE-এর সঙ্গেও তিনি যুক্ত ছিলেন। পরবর্তীতে GMAIL ও GOOGLE MAP দেখভালের দায়িত্বও বর্তায় তাঁর উপরেই।
১০. ২০১১-য় TWITTER সুন্দরকে মোটা টাকা অফার করে, google ছেড়ে টুইটারে যোগ দেওয়ার জন্য। সুন্দর সেই আহ্বানে সাড়া দেননি। গুগলও সেসময় তাঁর পারিশ্রমিক বাড়িয়ে তাঁকে আটকে রাখতে চেষ্টার কোনও ত্রুটি রাখেনি। বড়-বড় কোম্পানি যাকে নিয়ে এমন কামড়াকামড়ি করে মরে, তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ ১৫০ মিলিয়ন ডলার হবে না তো কার হবে?
বিজ্ঞানী  ও সাধারন মানুষদের মধ্যে একটি বিশেষ পার্থক্য  হল তাদের ধৈর্য্য ও চিন্তা ,  বিজ্ঞানের বহু আবিষ্কারের পিছনে রয়েছে বিজ্ঞানীদের  দীর্ঘ  সময়ের গবেষনা । কেও হয়ত কোন জিনিস নিয়ে  গবেষনায় ছিল মাসের পর মাস , কেও আবার ছিল বছরের পর বছর ,  এখন বলব পৃথিবীর ইতিহাসের সবচেয়ে দীর্ঘ একটি পরীক্ষার কথা , যা ১৯৩০ সালে শুরু হয়ে এখন পর্যন্ত চলছে ।

হয়ত  শুনতে  আজব লাগতে পারে ,  তবে আরো আজব করার মত জিনিস হল পরীক্ষাটি , আলকাতরার সান্দ্রতা (Viscosity) পরীক্ষা , পুস্তকীয় ভাষায় সান্দ্রতা বলতে বুঝায় তরল পদার্থের অভ্যন্তরীণ ঘর্ষণের ফলে প্রবাহে (বয়ে যেতে) বাধা দেবার প্রবণতাকে ।  

একটি কাচের ফানেলে আলকাতরা  দিয়ে কতক্ষনে তার ফোটা পড়ে এটি পরীক্ষা করাই ছিল মূল উদ্দ্যেশ্য।  ১৯৩০ সালে প্রফেসর থমাস পারনেলের হাত ধরে এই  পরীক্ষার সূচনা ঘটে , সর্বশেষ উত্তরসুরী হিসেবে এই পরীক্ষা পর্যবেক্ষন করেন প্রফেসর জন মেইনস্টোন ।  ১৯৩০ সালে শুরু  হয়ে প্রতি ৮ বছরে ১ টি ফোটা পরত  কিন্তু একটু দেরীতে  ১৯৮৮ সালে এর সপ্তম ফোটা টি  পড়ে , দেরী হওয়ার কারন হিসেবে ল্যাবের এয়ারকন্ডিশনিং সিস্টেমকে দায়ী করা হয়েছিল , ৮ম ফোটাটি পড়তে সময় একটু বেশী নিয়েছিল তা ছিল ২০০০ সাল। ৯ম ফোটাটি ২০১৪ সালের ১৭ ই এপ্রিল পড়ে ,   বেচে থাকতে এই পরীক্ষার শেষ দেখে যেতে পারেনি কেওই ,   পরীক্ষার শেষ গবেষক  জন মেইনস্টোন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান  আলকাতরার নবম ফোটা পড়ার  কিছু দিনের ভেতর।  এই পরীক্ষাটি  গিনেজ বুকে  the longest-running laboratory experiment  নামে  রেকর্ড করেছে।  ২০০৫ সালে এই পরীক্ষাটি IG Noble Prize পেয়েছিল  , IG noble  তারাই পায় যাদের কাজ নিয়ে মানুষ হাসবে কিন্তু এতে চিন্তা করার মত বিশেষ কিছু থাকবে ।
  যাকে বলা  হয় পৃথিবীর সবচেয়ে সফল অ্যানিমেটর । প্রথম কম্পিউটার এনিমেটেড
 ফিল্ম “টয় স্টোরি” শুরু হয় যার হাত ধরে। হ্যাঁ ঠিক ধরেছেন  আমি পিক্সার কোম্পানির নাম বলছি । 

আজকে আমরা তার সম্পর্কে কিছু তথ্য জানবো 

পৃথিবীর সর্বকালের সেরা উদ্যোক্তাদের তালিকায় স্টিভ জবসের নামটি একদম প্রথম দিকে থাকবে। তথ্য-প্রযুক্তি বিপ্লবের একজন স্বপ্নদ্রষ্টা হিসেবে তাঁর অবদান বিশ্ববাসী শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে সবসময়।


১। স্টিভ জবসের মূল বাবা ও মা ছিল যথাক্রমে সিরিয় ও মার্কিন। জন্মের পরপরই তাকে দত্তক দিয়ে দেওয়া হয়।
২। জবসের পালিত বাবা ও মায়ের নাম পল জবস ও ক্লারা জবস।
৩। অ্যাপলের সহনির্মাতা ওজনিয়াকের সাথে জবসের দেখা হয় হাইস্কুলে। ওজনিয়াকের বয়স তখন ১৮ ও জবসের ১৩।
৪। স্টিভ জবস মাছ খেলেও মাংস খেতেন না।
৫। হাই স্কুলে জবসের জিপিও ছিল মাত্র ২.৬৫।
৬। মাত্র এক সেমিস্টারের পরই তিনি কলেজের পড়াশুনা বাদ দিয়ে দেন।
৭। কলেজ ছাড়ার পর আর্থিক সঙ্কটে পড়লে তিনি সাত মাইল হেঁটে একটি মন্দিরে গিয়ে খাবার খেয়ে আসতেন।
৮। ১৯৮৬ সালে তার নিজের তৈরি প্রতিষ্ঠান অ্যাপল থেকে তাকে বের হয়ে যেতে হয় কিন্তু পরবর্তীতে ১৯৯৭ সালে তিনি আবারও অ্যাপলে যোগদান করে প্রতিষ্ঠানটিকে আর্থিক ক্ষতির হাত থেকে বাঁচান।
৯। জবস প্রোগ্রামিং কোড জানতেন না।
১০। ২০০৩ সালে তার প্যানক্রিয়াসে ক্যানসার ধরা পড়ে। অনেকের ধরণা, সাথে সাথে অপারেশন করা হলে তিনি ২০১১ সালে মারা যেতেন না।
 স্টিভ জবসের সেই বিখ্যাত ভাষণ পার্ট- ১ পড়তে ভিসিট করুন এখানে 




হঠাৎ চিন্তা হল গুগল নিয়ে কিছু লেখি ,  ইন্টারনেট ব্যাবহারকারীরা বলতে গেলে অধিকাংশই তাদের দিন শুরু করে গুগল দিয়ে ,  তো আর দেড়ি না করে গুগল নিয়েই বসে পড়লাম 
গুগলের সার্চ বক্সে সার্চ দিলাম Google 
ব্যাপারটা অনেকটা  নিজের কাছে নিজের খবর জিজ্ঞেসকরার মতই হয়ে গেল, তবে যাই হোক   গুগল নিয়ে ঘাটতে ঘাটতে বেড় করলাম অসংখ্য ঘটনা , সব হয়ত একপর্বে বলা সম্ভব হবে না , 
তো আসুন গুগলকে কিছু খুজতে না দিয়ে নিজেরাই শুরু করি  খোজাখুজি  

১৯৯৮ সালের ৪ অক্টোবর ,সকালে ক্যালিফোর্নিয়ার মেনলো পার্কের Susan Wojcick র গ্যারেজের দরজা খোলা হয় , সেই সাথে খুলে যায় বিশ্বের অন্যতম প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠান গুগলের  পথচলা  । গ্যারেজের মালিক সুজান ছিলেন  স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির পিএইচডি প্রোগ্রাম এর; দুই জন শিক্ষার্থী ল্যারি পেইজ ও সারজে ব্রিন এর বন্ধু  ,  এই দুজনের হাত ধরেই গরে উঠেছিল গুগল ।  যাত্রা শুরুর প্রাককালে দুই বন্ধু ছাড়াও  তাদের পাশে ছিলেন সান মাইক্রো সিস্টেমের সহ প্রতিষ্ঠাতা এন্ডি বেথটোশেইম । কোম্পানী দাড়ানোর আগেই তিনি ১ লাখ ডলার দেন। পরের বছরই জুন মাসে  দুটি কোম্পানী গুগলে আড়াই কোটি ডলার বিনিয়োগ করে। 
১৯৯৮ সালে গুগলের আনুষ্ঠানিক কাজ শুরু হলেও পরিকল্পনা  কিন্তু অনেক আগে থেকেই হয়েছে .১৯৬৬ সালেই  তারা কাজের পরিকল্পনা করে এবং সেটি অনুযায়ী এগোতে থাকে । সেই থেকেই এই দুই বন্ধুর পরিশ্রমের ফসল আজকের গুগল । গুগল শুধু মাত্র সার্চ ইঞ্জিন নয় , এটি একটি কোম্পানী , তবে সার্চইঞ্জিনই একে জনপ্রিয়তা বেশী দিয়েছে ।  গুগলের এই জনপ্রিয়তার কারন হল গুগল তাদের একটা স্পেশাল অলগরিদম (গানিতিক কার্যবিধি) ব্যবহার করে;যা ব্যবহারকারীদের সামনে অনুসন্ধান ফলাফল গুলো তুলে ধরে। যখন গুগল সাধারনভাবে এই অলগরিদম সম্পর্কে কথা বলে; তারা নির্দিষ্ঠভাবে অলগরিদমটির গোপনীয়তা রক্ষা করে। গুগল তাদের এই সার্চ ইঞ্জিন এর অলগরিদম রহস্য গোপন রাখার ফলে; অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিন এর তুলনায় প্রতিযোগিতামূলকভাবে শক্ত অবস্হান ধরে রাখতে পারছে। এটা গুগলকে আরো সাহায্য করে হ্যাকিং ও বাহির থেকে সিস্টেম এর অপব্যবহার রোধ করতে; কেননা ভেতরের অলগরিদম এর ঘটনা সবারই অজানা।

অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিন এর মতন গুগলও স্বয়ংকৃয় প্রোগ্রাম ব্যবহার করে; যা পরিচিত স্পাইডারস (spiders) ও ক্রয়লারস (crawlers) নামে।গুগল এর কাছে অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিন এর তুলনায় তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি; ওয়েবসাইট ইনডেক্স ও কীওয়ার্ড ইনডেক্স করা রয়েছে। সেকারনে একজন সাধারন ব্যববহারকারী অন্যান্য   সার্চ  ইঞ্জিন এর তুলনায়; গুগলেই সবচেয়ে বেশি প্রাসঙ্গিক ফলাফল লাভ করে। গুগল পেজ র‍্যাংক  (PageRank) নামে একটি নিজস্ব অলগরিদম ব্যবহার করে; যা বিভিন্ন ওয়েবসাইটকে অটোমেটিং ক্রয়ল করে তাকে বিভিন্ন মানদন্ডে আলাদা করে।


গুগলের নাম কিন্তু  লিন্যাক্সের নামের মতই ভুলে করে হয়ে যাওয়া নাম ।  প্রথমদিকে গুগলের নাম দেয়া ছিল ব্যাকর‍্যাব । পরবর্তীতে এই নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় গুগল।  আমরা অনেকেই মাঝে মাঝে google বানান ভুল করে  Googol  লিখে ফেলি , মজা ব্যাপার হচ্ছে আমাদের ভুল করা এই শব্দটি ছিল ল্যারি ও সের্গের দেয়া নাম ,  ১৯৯৭ সালের ১৫ ই সেপ্টেম্বর ল্যারি পেইজ ও সের্গেই ব্রিন গুগল ডট কম নামে একটি ডোমেইন নিবন্ধন করেন। কিন্তু তারা যেই ডোমেইনটি নিবন্ধন করতে চেয়েছিলেন সেটি না হয়ে ভুলবশত নিবন্ধিত হয় “Google” নামে। Googol  এর মানে হচ্ছে ১ এর পরে ১০০ টি শূন্য , গানিতিক ভাষায় বলতে গেলে টেন টু দি পাওয়ার হান্ড্রেড ।  (10^100 = 10,000,000,000,000,000,000,000,000,000,000,000,000, 000,000,000, 000,000,000, 000,000, 000,000,000,000,000,000,000,000,000,000,000, 000,000 )
তখন সবচেয়ে বড় হার্ডডিস্ক ড্রাইভের মেমোরি সাইজ ছিলো ৪ গিগাবাইট। তাই তারা কম দামে লেগো সেট দিয়ে বানানো একটি কেবিনেটে ১০টি হার্ড ড্রাইভের সমাবেশ ঘটান, গুগলের সার্চ ইনডেক্সের আকার ১০ কোটি গিগাবাইটেরও বেশি। কেউ যদি ব্যক্তিগতভাবে এই তথ্য জমা রাখতে চান, তবে তাঁর এক টেরাবাইট আকারের এক লাখ হার্ডড্রাইভের দরকার হবে।


গুগলের প্রথম দিকের হোম স্ক্রিন ছিল অনেকটাই সাদামাটা এর মূল কারন ছিল উদ্ভাবকরা তখন HTML এ অতটা দক্ষ ছিলেন না ,
১৯৯৯ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে গ্যারেজ থেকে সরে  ইউনিভার্সিটী এভিনিউ তে স্থানান্তরিত হয় গুগল । সেসময় এর কর্মচারীর সংখ্যা ছিল ৮ জন,পড়ে তা বেড়ে ৪০ হয়  , বর্তমানে প্রায় ১৬,০০০ লোকের কর্মসংস্থান জুগিয়েছে এই গুগল।

প্রতিনিয়ত গুগল তাদের সার্চ ইঞ্জিনে আনছে নতুনত্ব । এমনই একটী সংযোজন হচ্ছে ডুডল , যেকোন দেশের বিশেষ দিনে  সেই দেশের ডোমেইনেই ডুডল দেখানো হয় , আবার আন্তর্জাতিক দিবস গুগলতেও থাকে বিশেষ ডুডল।ল্যারি পেজ ও সের্গেই ব্রিন মিলে ১৯৯৮ সালের আগস্ট মাসে প্রথম ডুডল তৈরি করেন। ‘তাঁরা অফিসের বাইরে আছেন এবং এ সময় কারিগরি কোনো ত্রুটির সমাধান করা যাবে না’—এই বার্তা ব্যবহারকারীদের কাছে পৌঁছানোর জন্য প্রথম ডুডলটি তৈরি হয়।
 ১৯৯৮ সালের ‘বার্নিং ম্যান ফেস্টিভ্যাল’-এর জন্য প্রথম ডুডলটির ডিজাইন করেন গুগলের দুই প্রতিষ্ঠাতা ল্যারি পেজ ও সের্গেই ব্রাইন। তবে বর্তমানে লোগোর ডিজাইন করার জন্য গুগলের একটি বিশেষ টিম রয়েছে, এই টিমের সদস্যদের ডাকা হয় ডুডলার নামে।

( আগামী পর্বে সমাপ্ত )
সফটওয়্যার জায়ান্ট মাইক্রোসফটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সত্য নাদেলা জীবন ও কর্ম নিয়ে এবার বই লিখেছেন। বইটির নাম ‘হিট রিফ্রেশ’।



নিজের লেখা বইয়ের ফাস্ট কপি সংগ্রহ করে পড়ছেন সত্য নাদেলা। 

মাইক্রোসফটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সত্য নাদেলা ১৯৬৭ সালের ১৯ আগস্ট জন্মগ্রহণ করেন। ভারতীয় বংশোদ্ভূত এ প্রযুক্তিবিদ হায়দরাবাদ পাবলিক স্কুল থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের পাট চুকিয়ে মনিপাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেছেন। চলতি মাসে ৫০ বছরে পদার্পণ করেছেন তিনি। 
১৯৯২ সালে মাইক্রোসফটে যোগ দেন সত্য নাদেলা। বৈশ্বিক বাজারের শীর্ষ সফটওয়্যার কোম্পানিতে যোগদানের আগে সান মাইক্রোসিস্টেমসের হয়ে কাজ করেছেন। বর্তমানে ওই কোম্পানিটি ওরাকল করপোরেশনের মালিকানাধীন। মাইক্রোসফটে যোগদানের এ দীর্ঘ সময়ে কোম্পানিটির বিং অনুসন্ধান ইঞ্জিন, জনপ্রিয় সেবা উইন্ডোজ সার্ভার এবং ক্লাউডের পাশাপাশি এন্টারপ্রাইজ কোম্পানিগুলোর জন্য মাইক্রোসফট অফিসের ক্লাউড সংস্করণ ব্যবসা প্রসারে অবদান রেখেছেন। তিনি মার্কিন প্রভাবশালী সফটওয়্যার নির্মাতা কোম্পানিটির প্রথম নন-আমেরিকান সিইও।

বিশ্বের সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পাওয়া ২০০ টেক সিইওর তালিকার শীর্ষ চার নম্বরে রয়েছেন সত্য নাদেলা। এ ছাড়া শুধু যুক্তরাষ্ট্রের সিইওদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক পান নাদেলা। তিনি বার্ষিক সম্মানী হিসেবে পান ৮ কোটি ৪৩ লাখ ৮ হাজার ৭৫৫ ডলার। 
মাইক্রোসফটের প্রধান নির্বাহী সত্য নাদেলা পরামর্শদাতা হিসেবে পেয়েছেন বিল গেটসকে।

বেশির ভাগ ভারতীয় নাগরিকের মতোই সত্য নাদেলা ক্রিকেটের অনেক বড় ভক্ত। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে পড়ার সময় স্কুল ক্রিকেট দলের সদস্য ছিলেন তিনি। এক সাক্ষাৎকারে নাদেলা বলেন, ক্রিকেট খেলা থেকেই তিনি দলবদ্ধ হয়ে কাজ করা এবং নেতৃত্ব দেয়ার শিক্ষা পেয়েছেন। এর পাশাপাশি নাটকীয়তায় পরিপূর্ণ রাশিয়ান উপন্যাস পছন্দ করেন তিনি। প্রযুক্তি ছাড়াও সত্য নাদেলা কবিতা পড়তে ভালোবাসেন। মাইক্রোসফটের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে তার প্রোফাইলের পাশে অন্যতম শখ কবিতা পড়ার কথা উল্লেখ আছে। 


তিনি তার বক্তৃতায় মাঝে মধ্যেই বলেন, কবিতা ও কোডিং অনেকটা একই জিনিস। অর্থাৎ কোনো একটি বিষয় বিস্তারিত তুলে ধরতে অসংখ্য বাক্য ব্যয় করতে হয়। কিন্তু সেটাকে সংক্ষিপ্ত করে কয়েক বাক্যের মধ্যে নিয়ে আসাই কবিতা। ‘হিট রিফ্রেশ’ নামে নিজস্ব বই নিয়ে কাজ করছেন নাদেলা। তিনটি বিষয়কে ভিত্তি করে এ বই লিখছেন তিনি। 

বইটি লিখে নিজেই লিংকড-ইন-এ পোস্ট করেন। তার লেখাটি পড়তে ক্লিক করুন এখানে।
প্রত্যাখ্যানের পর প্রত্যাখ্যানই দেখেছি আমি।।।হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য ১০বার আবেদন করে।১০বারই প্রত্যাখ্যাত হয়েছি ।

এতক্ষণ যার কথা বলেছি তিনি হলেন পৃথিবীর অন্যতম বড়।অনলাইন ভিত্তিক কম্পানি আলিবাবা ডটকমের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান জ্যাক মা৷তার জন্ম চীনের জিজিয়াং প্রদেশে৷





ফোবর্স
ম্যাগাজিনের হিসেবে জ্যাক মা পৃথিবীর ৩৩ তম ধনী ব্যক্তি৷তার মোট সম্পদের পরিমাণ ২১ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার৷
জ্যাক মার জীবনে এতবার ব্যার্থ হওয়ার পরও বড় হওয়ার,প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আশা থেকে বিন্দু মাত্র
পিছপা হন নি৷


অবিরাম চেষ্টা চালিয়ে তিনি আজকের অবস্থানে এসেছেন৷যেই জ্যাক মা চাকরির জন্য ৩০ বার প্রত্যাখ্যাত হয়েছিলেন সেই জ্যাক মার প্রতিষ্ঠান আলিবাবা ডটকম চীনে নতুন করে ১৪ মিলিয়ন চাকরি তৈরি করেছে৷



সমস্যা, সমাধান, সুযোগ এবং নতুনভাবে শুরু করার গল্প


ই-কমার্সের বিশাল সাম্রাজ্যে জায়ান্টদের মধ্যে অন্যতম ই-কমার্স ওয়েবসাইট আলিবাবা শুরু করার বছর পাঁচেক আগেও জ্যাক মা ইন্টারনেট সম্পর্কে ওয়াকিবহাল ছিলেন না। ১৯৯৪ সালে তিনি প্রথম ইন্টারনেট নামক মাধ্যমের অস্তিত্ব সম্পর্কে জানতে পারেন। ১৯৯৫ সালের প্রথম দিকে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যান এবং সেখানে এক বন্ধুর সহযোগিতায় ইন্টারনেটের প্রথম পাঠ নেন। সেসময় তিনি ইন্টারনেটে ‘বিয়ার’ লিখে সার্চ দিয়ে যে সমস্ত তথ্য পান, তার মধ্যে বিভিন্ন দেশের ওয়েবসাইটের অবদান থাকলেও নিজ দেশ থেকে কোনো অবদান তার চোখে পড়েনি। এমনকি তার নিজের দেশের তথ্য ইন্টারনেটে সার্চ দিয়েও না পেয়ে বেশ মনঃক্ষুণ্ণ হন জ্যাক। পরে নিজেই এক বন্ধুর সহযোগিতায় একটি সাধারণ ওয়েবসাইট তৈরি করেন। ওয়েবসাইটটি প্রকাশ করার মাত্র ঘণ্টা পাঁচেকের মধ্যে তিনি বিভিন্ন জনের কাছ থেকে শুভেচ্ছা বার্তা পান। এটিই মূলত ইন্টারনেট ভিত্তিক ব্যবসা করার অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করে তার জন্য।



সে বছরই জ্যাক তার স্ত্রী জ্যাং ইং এর সহযোগিতায় বন্ধু-বান্ধবের কাছ থেকে প্রায় বিশ হাজার ইউএস ডলার সংগ্রহ করেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের একজন বন্ধুর সহযোগিতায় china yollow page নামের একটি কোম্পানি তৈরি করেন। তাদের মূলত কাজ ছিল চীনের বিভিন্ন কোম্পানির জন্য ওয়েবসাইট তৈরি করে দেয়া, যদিও জ্যাক প্রোগ্রামিং এর কিছুই জানতেন না। মাত্র তিন বছরের মধ্যে সেই কোম্পানি প্রায় আট লক্ষ ইউএস ডলারের মতো মুনাফা লাভ করে। এই পরিমাণটা সেই সময়ের তুলনায় অনেক বিশাল ছিল।

সে সময়ের কথা বলতে গিয়ে জ্যাক জানান, ওয়েবের সাথে সংযুক্তির পর দিনদিন চারপাশ বদলাতে থাকে। কিন্তু ইন্টারনেট সংযোগ অনেক ধীর গতির হওয়ায় একটি ওয়েব পেজ লোড হতেই অধিকাংশ সময় ঘণ্টা তিনেকের মতো প্রয়োজন হতো। ঐ সময়টা অতিবাহিত করার জন্য আমি আমার বন্ধুদেরকে বাড়িতে দাওয়াত দিতাম। টিভি দেখে, তাস খেলে, মাতাল হওয়ার মাধ্যমে সময়টা বেশ কেটে যেত।



২০০৩ সালে Taobao Marketplace, Alipay, Ali Mama এবং Lynx নামের চারটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। এর মধ্যে টাওবাও মার্কেটপ্লেস বেশ দ্রুতগতিতে বাড়তে থাকে। সে সময় বর্তমান বিশ্বে দ্বিতীয় বৃহত্তর ই-কমার্স কোম্পানি হিসেবে প্রতিনিধিত্ব করা ebay থেকে আলিবাবাকে কেনার প্রস্তাব দেওয়া হয়। কিন্তু জ্যাক মা তাদের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন এবং ইয়াহুর সহ-প্রতিষ্ঠাতা Jerry Yang থেকে পাওয়া এক বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ নিয়ে তার স্বপ্নের প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করতে থাকেন। তার সঠিক সিদ্ধান্ত, বুদ্ধিদীপ্ত পদক্ষেপ এবং হাল ছেড়ে না দেয়ার ফলাফল হিসেবে আলিবাবা বর্তমানে  বিজনেস-টু-বিজনেস, বিজনেস-টু-কাস্টমার এবং কাস্টমার-টু-কাস্টমার সার্ভিস দেয়া কয়েকশ বিলিয়ন ডলারের কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে।


অনুপ্রেরণায় জ্যাক মা



জ্যাক মার মতে, “আপনি যদি হাল ছেড়ে না দেন, তাহলে সামনে জয়ী হওয়ার আরো সুযোগ পাবেন।” তিনি আরো বলেন, “যদি আপনি চেষ্টাই না করেন, তাহলে কীভাবে বুঝবেন কোনো সুযোগ আছে কি নেই?” অর্থাৎ তিনি হাল ছেড়ে না দিয়ে চেষ্টা চালিয়ে যেতে বলেছেন। এক জায়গায় ব্যর্থ হলেও, আরেক জায়গায় চেষ্টা করার কথা বলেছেন। তিনি বারবার ধৈর্য ধারণ করার কথা বলেছেন। নিজের পছন্দের কাজের প্রতি আসক্ত হবার কথা বলেছেন। ছোট ছোট কাজ দ্বারা এগিয়ে যাবার মাধ্যমে বড় কিছু করার স্বপ্ন দেখতে উৎসাহী করেছেন।

বিশ্বের সবচেয়ে আকর্ষণীয় বৈদ্যুতিক গাড়ি টেসলার উদ্ভাবক



তিনিই সেই ব্যক্তি এলন রীভ মাস্ক, যিনি টেসলা মোটরস, সোলার সিটি এবং স্পেস এক্স, এই তিনটি বড় বড় নামজাদা কোম্পানির কর্ণধার।মাত্র ৪৫ বছর বয়সেই তিনি পৃথিবীর পরিবেশ নিয়ে ধ্যান ধারণার উর্ধ্বে উঠে পৃথিবীর ভোল পাল্টে দেওয়ার প্রযুক্তিতে বদ্ধ পরিকর।




গাড়ি ছাড়াও রকেট নির্মাতাপ্রতিষ্ঠান স্পেস এক্সের প্রধান নির্বাহী ও প্রতিষ্ঠাতা মাস্ক। এ বছর গভীর মহাকাশ থেকে পরিবেশের ওপর নজরদারি করার জন্য গুগল ও ফিডেলটি নামের প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ১০০ কোটি মার্কিন ডলার তহবিল পেয়েছে তাঁর এই প্রতিষ্ঠানটি। এ ছাড়া মহাকাশ থেকে তারহীন উপায়ে পুরো বিশ্বে নেটওয়ার্ক সিস্টেম গড়ে তুলতে ৪০০ কৃত্রিম উপগ্রহ
 উৎক্ষেপণের জন্য সরকারি অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে স্পেস এক্স। ২০১৩ সালে একটি বিশেষ টিউবের মধ্য দিয়ে দ্রুতগতির ট্রেন সিস্টেম বা হাইপারলুপের নকশার কথা জানান মাস্ক।



এলন মাস্কের দাবি, হাইপারলুপ হবে বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুতগতির যোগাযোগ প্রযুক্তি। সৌরশক্তিনির্ভর এ ব্যবস্থায় ঘণ্টায় ৬০০ মাইলেরও বেশি গতিতে যোগাযোগ করা যাবে, অথচ এ যোগাযোগ প্রযুক্তি হবে প্লেন বা ট্রেনের চেয়ে সাশ্রয়ী। স্টেশন থেকে দ্রুতগতির হাইপারলুপ প্রযুক্তির যানে চেপে দ্রুততম সময়ে গন্তব্যে পৌঁছানো সম্ভব হবে। হাইপারলুপ প্রযুক্তি মার্কিন ব্যাংকগুলোর




 অর্থ লেনদেনের একটি পদ্ধতি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এলন মাস্কের মতে, হাইপারলুপ হবে শব্দের চেয়ে দ্রুতগতির কনকর্ডবিমান, দ্রুতগতির ট্রেন ও এয়ার হকির নকশার সমন্বিত রূপ। এটি এমন একটি যোগাযোগব্যবস্থা হবে, যার মাধ্যমে একটি টিউব কয়েকটি দেশ অথবা শহরজুড়ে থাকবে। টিউবের ভেতর থাকবে ক্যাপসুল। টিউব ব্যবস্থার মধ্যে কোনো বায়ু থাকবে না।
 ফলে থাকবে না কোনো প্রকার ঘর্ষণশক্তি। এই দ্রুতগতির ক্যাপসুলে চড়ে ঘণ্টায় ৬০০ মাইল বেগে ভ্রমণ করা যাবে।হাইপারলুপ ব্যবস্থায় ঘণ্টায় দুই লাখ মানুষের ভ্রমণের সুযোগ থাকবে। আর নিউইয়র্ক থেকে লস অ্যাঞ্জেলেসে যেতে সময় লাগবে মাত্র ৪৫ মিনিট এবং নিউইয়র্ক থেকে বেইজিং যেতে লাগবে দুই ঘণ্টা। মাস্ক প্রবর্তিত এই হাইপারলুপ প্রযুক্তি পরীক্ষামূলকভাবে চালু হয় এ বছর। 



হাইপারলুপ ট্র্যাক নির্মাণে খরচ হবে ৬০০ কোটি মার্কিন ডলার।

আজকের অনলাইন দুনিয়ার ইন্টারনেট পেমেন্টের পদ্ধতি মূলত এই প্রযুক্তিবিদ এলন মাস্কের মস্তিষ্ক প্রসূত। ভার্চুয়াল ওয়ালেটের উৎপত্তি কিন্তু পেপ্যালের হাত ধরেই। আজকের আধুনিক বিশ্বে এক অভিনব সাড়া জাগিয়েছে তার কোম্পানি পেপ্যাল। পেপ্যালের নাম পূর্বে ছিল ‘এক্স ডট কম’। শুরুর এক বছরের মাথায় ২০০১ সালে নাম পাল্টে হয় পেপ্যাল।


পরবর্তীতে ২০০২ সালে eBay কোম্পানি এক দশমিক পাঁচ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিময়ে পেপ্যাল কিনে নেয়,যেখানে এলনের শেয়ারে প্রাপ্ত অর্থ ছিল ১৮০ মিলিয়ন ডলার। অথচ অদ্ভুত হলেও সত্য যে, তার মূল ভালোবাসা তখনও ছিল পরিবেশ এবং মহাকাশের উপরেই। তারই পথে ছুটে যেতে কোম্পানি বিক্রি করে যে মোটা অর্থ তিনি পেয়েছিলেন তার অধিকাংশই ব্যয় করেছেন 



সৌরশক্তির পেছনে। তার স্বপ্ন ছিল কার্বনের কালো থাবা মুক্ত এক পৃথিবীর, যেখানে মানুষ বুক ভরে নিশ্বাস নিতে পারবে, গড়ে তুলবে সুন্দর এক পৃথিবী। 
 আজীবন তেজষ্ক্রিয় পদার্থ নিয়ে কাজ করে এক অজানা রোগে মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুর আইনস্টাইন বলেছিলেন: সুপ্রসিদ্ধ মনীষীদের মাঝে একমাত্র মেরি কুরীর জীবনই যশের প্রভাবমুক্ত ছিল। নিজের জীবনটা যিনি অপরিচিতের মতো সম্পূর্ণ ভিন্নভাবে পেরিয়ে গিয়েছেন, সেই চিরকেলে নারীর কথা লিখতে বসে আজ আমি নিজের মধ্যে সাহিত্য প্রতিভার অভাব বোধ করছি। মেরী স্কলোডসকা কুরীর জন্ম পোল্যান্ডের ওয়ার্স এ রাশিয়ায় অত্যাচারী জার শাসনের নিষ্পেষণের সময়। পরিবারে তাঁকে মানিয়া নামে ডাকতো। তাঁর বাবা ব্লাদিস্লাভ শক্লোদোভস্কি ওয়ার্সে একটি নামকরা কলেজের পদার্থের অধ্যাপক ছিলেন এবং মা ছিলেন একটি নামকরা স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা। তাঁর বাবা প্রতি শনিবার সন্ধ্যায় মেরীর পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বিজ্ঞান ও সাহিত্য বিষয়ে আসর বসাতেন।




কসময় তাঁর পরিবার মারাÍক অর্থ সংকটে পড়ায় তাঁর বড় বোনের পড়াশুনার খরচ চালানোর জন্য তিনি ১৮৬৬ সালের ১ জানুয়ারি মাসিক পাঁচশ রুবল-এর বিনিময়ে এক অভিজাত রুশ আইনজীবির বাড়িতে গভর্নেসের চাকরি নেন। তাদের দুবোনের মধ্যে শর্ত ছিল একজনের পড়াশুনা শেষ হবার পর অপর জনের পড়াশুনার খরচ যোগাবে। তাই অনেক মানসিক পীড়নের মধ্যে তাঁকে তিন বছর চাকরি করতে হয় এবং এরই মধ্যে তার বড় বোন ব্রোনিয়া ডাক্তারী পাস করে। পূর্ব শর্তানুযায়ী এবার মেরী তাঁর বোনের আর্থিক সহায়তায় বিজ্ঞানের উচচশিক্ষার জন্য প্রথমে অস্ট্রিয়ার শাসনাধীন ‘ক্রাকো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যান। কিন্তু সেখানে তিনি বিজ্ঞান ক্লাসে যোগ দিতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সচিব তাকে অসম্মতি জ্ঞাপন করে বলেন “বিজ্ঞান মেয়েদের জন্য নয় তাই তিনি যেন রন্ধন শিক্ষা ক্লাসে যোগ দেন।” পরিচয় ঘটে এক ফরাসী বিজ্ঞানী পিয়ারে কুরীর সাথে যিনি ইতিমধ্যে চুম্বকত্ব ও পদার্থবিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় মৌলিক গবেষণা করে খ্যাতি অর্জন করেছেন। পিয়ারে কুরী তার জীবনকে পরিবর্তীত করার ক্ষেত্রে নিয়ামক ভূমিকা রাখেন। তারা বিয়েও করেন। ১৮৯৮ সালেই এই দ¤পতি প্রথমে পিচব্লেণ্ড হতে তেজষ্ক্রিয় পদার্থ পলোনিয়াম (৯৪চঁ২৩৯) এবং পরে রেডিয়াম (জধ) আবিষ্কার করেন যা ইউরোনিয়াম [৯২ট২৩৯] হতে দশ লক্ষগুণ বেশি শক্তিশালী।




এই রেডিয়ামের ব্যবহার অপরিসীম। তাদের কাজের অবদান স্বরূপ ১৯০৩ সালে লন্ডনের রয়্যাল সোসাইটি কুরী দ¤পত্তিকে ডেভী পদক প্রদান করে। এবং এ বছরই পদার্থবিজ্ঞানে হ্যানরী বেকেরেলের সাথে তাদেরকে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়।
তিনি রেডিয়ামকে বিশুদ্ধ অবস্থায় আলাদা করতে সক্ষম হন। এবং পুণরায় তাঁর যোগ্যতা প্রমাণে সক্ষম হন। তার এই কৃতিত্বের জন্য ১৯১১ সালে রসায়ন বিজ্ঞানে তিনি একা নোবেল পুরস্কার পান। দ্বিতীয় যুদ্ধে আহত সৈনিকদের যিনি দিয়েছেন একাগ্র সেবা, ভবিষ্যত বিজ্ঞানীদের দিয়েছেন উপদেশ ও পরামর্শ। সর্বোপরি নিজের স্বাস্থ্যের দিকে না তাকিয়ে যিনি ঢেলে দিয়েছেন তাঁর সবটুকু সময়।
সায়েন্টিফিক গণনার প্রতিষ্ঠাতা অ্যাডা বায়রনের জন্ম লন্ডনে। সেখানেই তার মৃত্যু হয়। অগাস্টা অ্যাডা বায়রন [Ada Byron] ছিলেন রোমান্টিক কবি লর্ড বায়রন ও অ্যানে ইসাবেলে মিলব্যাংকের কন্যা। ১৮১৫ সালের ১০ ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেছিলেন পৃথিবীর এই প্রথম কম্পিউটার প্রোগ্রামার হিসেবে পরিচিত এ নারী গণিতবিদ। কিন্তু অ্যাডার জন্মের ঠিক এক মাস পর এই দম্পতি পৃথক হয়ে যান। আর জন্মের মাত্র চার মাস পর লর্ড বায়রন চিরকালের জন্য ইংল্যান্ড ছেড়ে চলে যান। অ্যাডার কখনও বাবার সঙ্গে দেখা হয়নি। ১৮২৩ সালে অ্যাডার বাবা গ্রিসে মারা যান। তার মা লেডি বায়রনই তাকে বড় করে তোলেন। তার পুরো নাম ছিল অ্যাডা অগাস্টা কিং, আর ডাকা হতো কাউন্টেস অব লাভলেস বা শুধুই অ্যাডা লাভলেস নামে। অ্যাডা মাত্র ৩৬ বছর বেঁচে ছিলেন। ১৮৫২ সালের ২৭ নভেম্বর জরায়ুর ক্যান্সার এবং অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়।



তার জীবন আবেগ ও যুক্তি, কবিতা ও গণিতশাস্ত্র এবং অসুস্থ স্বাস্থ্য ও শক্তি ক্ষরণের মধ্যকার সংগ্রামে মহিমান্বিত। মা লেডি বায়রন কোনোভাবেই চাননি তার মেয়ে বাবার মতো কাব্যিক হোক। তিনি চেয়েছিলেন অ্যাডা গণিত ও সঙ্গীত শিক্ষায় বড় হোক, যাতে বিপদজনক কাব্যিক প্রবণতাকে প্রতিরোধ করা যায়। কিন্তু অ্যাডার উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া সেই ঐতিহ্য ১৮২৮ সালের দিকেই প্রকাশ পায়। সেই সময় তিনিই ফ্লাইং মেশিনের নকশা প্রণয়ন করছিলেন। গণিতশাস্ত্র তার জীবনকে দিয়েছিল উড়ে চলার গতি।


১৭ বছর বয়সে [১৮৩২] তার গাণিতিক প্রতিভার স্ফুরণ ঘটে। ছেলেবেলা থেকেই মা তাকে গণিতে দক্ষ করে তুলতে চাইতেন যাতে বাবার প্রভাব কোনোভাবেই মেয়ের মধ্যে প্রতিফলিত না হয়। ১৮৪১ সালের আগে অ্যাডা জানতেনই না লর্ড বায়রন তার বাবা। গণিতজ্ঞ ও যুক্তিবিদ ডি-মরগান তার শিক্ষক ছিলেন! স্যার চার্লস ডিকেন্স, চার্লস হুইটস্টোন এবং বিজ্ঞানী মাইকেল ফ্যারাডের সঙ্গেও তার জানাশোনা ছিল। ১৮৩৩ সালের ৫ জুন তার সঙ্গে পরিচয় হয় স্যার চার্লস ব্যাবেজের। চার্লস ব্যাবেজের সঙ্গে তার বেশ ঘনিষ্ঠ এবং রোমান্টিক সম্পর্কও গড়ে ওঠে। ব্যাবেজ অ্যাডার অসাধারণ ধীরশক্তি, সাবলীল লেখনি এবং প্রতিভায় মুগ্ধ ছিলেন। ব্যাবেজ অ্যাডা সম্পর্কে নিজের লেখায় অ্যাডাকে ‘সংখ্যার জাদুকর’ উপাধিতে আখ্যা দিয়েছিলেন। পরে তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন।



উল্লেখ্য, আধুনিক কম্পিউটারের জনক চার্লস একটি ডিফারেন্সিয়াল যন্ত্র উদ্ভাবন করেন। যার উদ্দেশ্য ছিল বিভিন্ন সংখ্যার ঘাত গণনা করা অর্থাৎ কোনো সংখ্যাকে সেই সংখ্যা দিয়ে একবার, দু’বার, তিনবার, চারবার গুণ করলে যে ফল হয় তা বের করা। মজার ব্যাপার হচ্ছে, এই বিয়োগযন্ত্র বানানোর সময় আরেকটি নতুন যন্ত্র বানানোর স্বপ্ন দেখেছিলেন তিনি। এই যন্ত্রই তাকে ইতিহাসে অমর করে রেখেছে। এর নাম তিনি দিয়েছিলেন অ্যানালাইটিক্যাল ইঞ্জিন বা বিশ্লেষণী যন্ত্র। স্যার চার্লস উইলিয়াম ব্যাবেজ যখন তার ডিফারেন্স মেশিন বা অ্যানালিটিক্যাল ইঞ্জিন নামক কম্পিউটার আবিষ্কারের নেশায় মত্ত, তখন অ্যাডা তার গণিতবিষয়ক বিশ্লেষণী ক্ষমতার দ্বারা বুঝতে পেরেছিলেন এই কম্পিউটারগুলোর নাম্বার ক্রাঞ্চিংয়ের অমিত সম্ভাবনা সম্পর্কে। চার্লস ব্যাবেজ তাই লিখে গেছেন তার decline of Science in England বইয়ে। এই অসামান্যা নারীর সম্ভাবনাময় ধারণাগুলো চার্লস ব্যাবেজের কাজকে আরও বেগবান করেছিল। চার্লস ব্যাবেজের কল্পিত এই যন্ত্রে আধুনিক স্বয়ংক্রিয় কম্পিউটারের অনেকগুণই উপস্থিত ছিল। সৌভাগ্যের ব্যাপার, ব্যাবেজের অনেক ধারণার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন কবি কন্যা অ্যাডা বায়রন। অ্যাডা বায়রন এই যন্ত্রের কর্মসূচি বা প্রোগ্রাম করেছিলেন। তাই তাকে পৃথিবীর প্রথম প্রোগ্রামার বলা হয়।
তথ্য-প্রযুক্তি বিপ্লবের একজন স্বপ্নদ্রষ্টা হিসেবে তাঁর অবদান বিশ্ববাসী শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে সবসময়। আরেকটি কারণে অমর হয়ে থাকবেন তিনি চিরদিন। সেটি একটি অসামান্য বক্তৃতার জন্য। ২০০৫ সালে স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে এ বক্তৃতা দেন তিনি। পৃথিবীজুড়ে লাখো মানুষের হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া এ বক্তৃতাটি পাঠকদের জন্য ভাবানুবাদ করা হলো ঃ 




 আজ তোমাদের সামনে হাজির হতে পেরে বড় গৌরব হচ্ছে আমার! পৃথিবীর সবচেয়ে চমৎকার বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর একটির ছাত্র 
তোমরা। মজার ব্যাপার হলো আমি নিজে কখনো কলেজের পাটও চুকোতে পারিনি! আজ এই আনন্দের দিনে কোন জ্ঞানগর্ভ 
বক্তৃতা দেওয়ার ইচ্ছা নেই আমার। কেবল তিনটা গল্প শেয়ার করতে চাই তোমাদের সাথে। আমার জীবনের তিনটি গল্প। ব্যাস, এটুকুই।

প্রথম গল্পটা হচ্ছে জীবনটাকে এক সুতোয় বাঁধা নিয়েঃ 

আমি রীড কলেজে ভর্তি হওয়ার মাত্র ছয় মাসের মধ্যে ড্রপ আউট হয়ে যাই! কিন্তু দেখা গেল তারপর আরো প্রায় বছর দেড়েক 
সেখানে থেকে গেলাম সবকিছু ছেড়েছুড়ে চলে আসবার আগে। প্রশ্ন হচ্ছে, এত সাধের একটা কলেজ থেকে কেন ড্রপ আউট হলাম আমি?

এই গল্পের শুরু আসলে আমার জন্মেরও আগে। আমার মা ছিলেন কলেজে পড়ুয়া কমবয়সী একটি মেয়ে। আমাকে লালন পালন 
করার মত অবস্থা তার ছিল না। তিনি ঠিক করলেন আমাকে কারো কাছে দত্তক দিয়ে দেবেন। মায়ের খুব ইচ্ছা ছিল আমার দত্তক 
পরিবার হবে উচ্চশিক্ষিত, নিদেনপক্ষে কলেজ গ্র‍্যাজুয়েট।

সেভাবেই সব ঠিকঠাক, এক আইনজীবী পরিবারের সাথে দফা হলো আমাকে দত্তক নেওয়ার। সমস্যা বাঁধলো ঠিক আমার জন্মের সময়। 
শেষ মুহূর্তে সেই দম্পতি ভেবে দেখলেন তারা আসলে একটা কন্যাশিশু চান! তখন ওয়েটিং লিস্ট থেকে ফোন গেল আরেক দম্পতির কাছে।

“আমাদের কাছে একটি ছেলেশিশু এসেছে। আপনারা কি তাকে দত্তক নিতে আগ্রহী?”

“অবশ্যই!”

এভাবেই আমার নতুন বাবা মার কোলে চলে গেলাম আমি। কিন্তু আমার মা কিভাবে যেন খবর পেয়ে গেলেন এই নতুন বাবা মা
 কেউই আসলে কলেজের দোরগোড়া পেরোন নি! মা তো রেগে কাঁই! অবশেষে তাকে বহুকষ্টে ঠান্ডা করা গেলো এই শর্তে যে 
একদিন আমাকে অবশ্যই কলেজে পাঠানো হবে!

আমার নতুন বাবা মা তাদের কথা রাখলেন। সেদিনের সেই ছোট্ট আমি সতের বছর পর সত্যি সত্যি কলেজে পা রাখলাম! 
কিন্তু বোকার মত এত খরুচে একটা কলেজ বেছে নিলাম যে বেচারী বাবা মার সারা জীবনের সঞ্চয় জলের মত খরচ হতে লাগলো আমার 
পিছনে! এভাবে ছয় মাস চলার পর ভেবে দেখলাম ভুল সবই ভুল। আমি যে আসলে জীবনে কি করতে চাই সেটাই ভেবে পাচ্ছি না। 
কলেজের পড়ালেখা বিরাট যন্ত্রণা, এই আপদ বয়ে বেড়ানোর কোন মানে দেখলাম না। হুট করে সিদ্ধান্ত নিলাম ড্রপ আউট হয়ে যাই!

ঠান্ডা মাথায় ভাবতে গেলে নিজেকে বেকুব মনে হওয়ার কথা। কিন্তু আমার কেন যেন অনুভব হলো একদম ঠিক কাজ করেছি! মন যদি 
নাই টেকে কেন তবে ঝুলে থেকে খামাখা নিজেকে কষ্ট দেওয়া?!

সুতরাং কয়দিন পর দেখা গেল আমি মহানন্দে ক্লাস করা ছেড়ে দিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি ক্যাম্পাসে! বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টে ঘুরাঘুরি করি, যখন যেই 
ক্লাস ইন্টারেস্টিং লাগে সেখানে ঢুঁ মেরে আসি।

ব্যাপারটা কাগজে কলমে খুব বিপ্লবী শোনাচ্ছে, কিন্তু বাস্তবে রোমান্টিসিজমের ছিঁটেফোঁটাও ছিল না! যেহেতু আমি আর ছাত্র না, সুতরাং কোন 
রুম পেলাম না। সারাদিন দৌড়াদৌড়ি করে রাতে বন্ধুদের রুমের মেঝেতে মরার মত ঘুমাই। পকেটে কোন পয়সা নাই,  কাউকে 
কিছু বলতেও পারি না লজ্জায়। ক্ষিধেয় চোখে অন্ধকার দেখি। কোকের বোতল কুড়িয়ে ফেরত দিলে পাঁচ সেন্ট করে দেয়, আমি এই কাজ 
করে খাওয়ার খরচ জোটানো শুরু দিলাম। প্রতি রবিবার সাত মাইল হেঁটে হরে কৃষ্ণ মন্দিরে যেতাম, সেখানে মুফতে বড় ভাল খাবার মিলতো সেদিন!

মজার ব্যাপার হলো এত দুঃখ কষ্টের মাঝেও আমার কোন আফসোস ছিল না। এই ভবঘুরে জীবন নিয়ে বেশ ছিলাম। যখন যেটাতে আগ্রহ পাই
 সেটা নিয়ে লেগে থাকি। ব্যাপারটা যে কত সুদূরপ্রসারী ছিল তার একটা ছোট্ট উদাহরণ দেই-

কলেজে হঠাত একবার ক্যালিগ্রাফি কোর্স চালু হলো। ক্যাম্পাসের দেয়ালে দেয়ালে পোস্টারে, ড্রয়ারের লেবেল পর্যন্ত অসম্ভব সুন্দর ক্যালিগ্রাফি 
দিয়ে সাজানো। আমি বড় মুগ্ধ হলাম দেখে। যেহেতু কোন কাজ নেই, ভর্তি হলাম ক্যালিগ্রাফি কোর্সে। সারাদিন এটা নিয়েই পড়ে থাকি।
 টাইপোগ্রাফির যত খুঁটিনাটি, বিভিন্ন রকম ফন্ট, কালির ব্যবহার আরো কত কী শিখলাম। আমি বিজ্ঞানের মানুষ, শিল্পের এই প্রগাঢ় সৌন্দর্যের 
জগৎ আমাকে বিমোহিত করলো। শিল্পের প্রতি আমার জন্ম নিল গভীর আবেগ।

এই তুচ্ছ ক্যালিগ্রাফি কোর্স আমার জীবনে কোন কাজে লাগার কথা না। (যদি না আমি পোস্টারে লেখালেখির কাজ করে জীবন চালানোর কথা ভাবি!)
 কিন্তু বছর দশেক পর একটা দারুণ ব্যাপার ঘটলো! আমরা যখন প্রথম ম্যাক কম্পিউটার ডিজাইন করছিলাম, তখন আমার মনে ভীড় করলো 
সেই কলেজ জীবনে ক্লাস বাদ দিয়ে শেখা ক্যালিগ্রাফি কোর্সের কথা। দেখা গেল এতদিন পরেও কিছুই ভুলিনি, সব ঠিকঠাক মনে আছে! আমরা 
পরম মমতায় ম্যাক কম্পিউটারকে সাজালাম অসম্ভব সুন্দর সব টাইপোগ্রাফি দিয়ে।

একবার ভেবে দেখো তো, আমি যদি সেদিন ড্রপ আউট হয়ে এই ক্যালিগ্রাফি না শিখতাম, তাহলে ম্যাক কম্পিউটারে আগের খটোমটো
 ডিজাইনই থেকে যেতো। আর উইন্ডোজও যেহেতু আমাদের ডিজাইন চোখ বুঁজে মেরে দিয়েছে (!), সুতরাং বলাই যায়, সেদিনের সেই পাগলামিটা
 না করলে আজ পৃথিবীর কোথাও কম্পিউটারে এমন মন জুড়ানো টাইপোগ্রাফি হয়তো থাকতো না!

আমি যখন ক্যালিগ্রাফি শিখলাম, তখন কি আদৌ জানতাম আমার এই জ্ঞান একদিন পৃথিবী বদলে দেবে? এটাই হচ্ছে জীবনের আনন্দ।
 তুমি যখন কিছু শেখো, নতুন কিছু করো, ক্লাসের পড়ালেখার বাইরেও বিভিন্ন কাজে অংশ নাও, মনে হতে পারে এসব করে কী হবে?!
 কিন্তু দশ বছর পর যখন স্মৃতির পাতা উল্টাবে, তখন দেখবে এই টুকরো টুকরো পরিশ্রমগুলোর কি সুন্দর এক সুতোয় বাঁধুনি হয়েছে তোমার 
জীবনে! সুতরাং তুমি যাই কিছু করো না কেন, বিশ্বাস রেখো সবসময় নিজের উপর। একদিন তারায় তারায় রটিয়ে দেবে তোমার গল্প, এই অসম্ভব 
দৃঢ় বিশ্বাসটাই দেখবে বদলে দেবে জীবন চিরদিনের জন্য!

আমার দ্বিতীয় গল্পটা ভালবাসা নিয়ে। ভালবাসবার এবং হারাবার ঃ 

নেশা আর পেশা যার মিলে যায় সে বড় ভাগ্যবান। আমি খুব কম বয়সেই আমার ভালবাসার জায়গাটা খুঁজে পেয়েছিলাম। ওজ এবং
 আমি যখন বাসার গ্যারেজে অ্যাপলের যাত্রা শুরু দিলাম তখন আমার বয়স মাত্র বিশ! রাতদিন উন্মাদের মত খাটতাম আমরা। দেখা গেল 
মাত্র দশ বছরের মাথায় সেই গ্যারেজের ঘুঁপচিতে জন্ম নেওয়া অ্যাপল এখন দুই বিলিয়ন ডলারের বিশাল এক প্রতিষ্ঠান হয়ে দাঁড়িয়েছে, যেখানে 
চার হাজারেরও বেশি মানুষ কাজ করে! আমার তিরিশতম জন্মদিনের কয়দিন পরই বাজারে আসলো অ্যাপলের কালজয়ী উদ্ভাবন- দ্যা ম্যাকিন্টশ।

এবং তারপর পরই আমাকে অ্যাপল থেকে বের করে দেওয়া হলো!

কি আজব কান্ড! নিজের হাতে তৈরি করা একটা প্রতিষ্ঠান থেকে কিভাবে কেউ তোমাকে বের করে দেয়? ঘটনা হচ্ছে অ্যাপল যখন বড় হতে 
লাগলো, তখন এই বিপুল কাজের চাপ সামলানোর জন্য আমরা একজন চৌকস লোককে এনেছিলাম। কয়দিন পর দেখা গেল তার সাথে আমার 
চিন্তাভাবনা মিলছে না। অ্যাপলের ভবিষ্যৎ নিয়ে তার আর আমার পরিকল্পনায় আকাশ-পাতাল ফারাক! তখন দুজনের মাঝে বেশ ধুন্ধুমার 
কান্ড বেঁধে গেল, এবং অ্যাপলের পরিচালনা পর্ষদের সবাই গম্ভীর মুখে জানিয়ে দিলো তাদের সমর্থন ওর সাথেই আছে! সুতরাং মাত্র তিরিশ 
বছর বয়সে আমাকে নিজের হাতে তিল তিল করে গড়ে তোলা কোম্পানি থেকে রীতিমত ঢাকঢোল বাজিয়ে বের করে দেওয়া হলো! সারা জীবনের 
ভালবাসা আর সাধনা এক ফুঁৎকারে উড়ে গেল বাতাসে। আমার বুকের ভেতরটা দুমড়ে মুচড়ে গেল কষ্টে।

এরপর বেশ কিছুদিন আমি দিশেহারার মত ঘুরে বেড়ালাম। ভেতরটা একদম এলোমেলো লাগছিলো। একবার ভাবলাম সব ছেড়েছুড়ে
 নিরুদ্দেশ হয়ে যাই! কিন্তু এত দুঃখের মাঝেও একটা জিনিস অনুভব করলাম- আমার ভালবাসাটা হারিয়ে যায়নি!

অ্যাপল থেকে অপমানিত হয়ে বেরিয়ে আসতে হয়েছে আমাকে, সবার কাছে ব্যর্থতার প্রতীক এই স্টিভ জবস, কিন্তু তাতে আমার 
ভালবাসার নক্ষত্র এতটুকু ম্লান হয়নি! আমি ঠিক করলাম সবকিছু নতুন করে শুরু করবো।

প্রকৃতির এই এক লীলাখেলা। অ্যাপল থেকে ছাঁটাই হওয়ার পর আমার মনে হচ্ছিল লজ্জায় মাটিতে মিশে যাই! কিন্তু পিছন ফিরে তাকালে 
মনে হয়- আরে! এর থেকে চমৎকার আর কিইবা হতে পারতো জীবনে! সাফল্যের একটা বিশাল ভার আছে। হাজারো প্রত্যাশা আর দম্ভ 
বুকের মাঝে পাথর হয়ে চেপে বসে। সবসময় একটা গন্ডির ভিতর চলতে হয়, চাইলেই যা ইচ্ছা করা যায় না। কিন্তু আমি যেহেতু সবকিছু
 একদম নতুন করে শুরু করছি, আমার এরকম কোন ঝামেলা নেই! যা ইচ্ছা, যেমন খুশি তেমন চলার আনন্দে বিভোর আমি প্রত্যাশার শিকল
 ভেঙ্গে ডুব দিলাম সৃজনশীলতার এক অপূর্ব জগতে!

পরের পাঁচ বছরে আমি “নেক্সট” নামে একটা কোম্পানি খুললাম। তারপর “পিক্সার” নামে আরো একটা, এবং প্রেমে পড়লাম
 অসাধারণ এক রমণীর, বিয়ে করে ফেললাম দুজনে! এই পিক্সার থেকেই আমরা বের করলাম পৃথিবীর প্রথম কম্পিউটার এনিমেটেড
 ফিল্ম “টয় স্টোরি”। এখন তো পিক্সার পৃথিবীর সবচেয়ে সফল এনিমেশন স্টুডিও!





সংগৃহীত - 

ম্যান্ডেলার আসল নাম রোলিহলাহলা দালিভুনা ম্যান্ডেলা। কালো চামড়ার মানুষের অথিকার আদায়ের জন্য ২৭ বছর জেলে কাটানো এই মহান নেতার জীবন অনেক নাটকীয়তায় মোড়া। আজ থাকছে ম্যান্ডেলার জীবন সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য।




  1. ম্যাণ্ডেলা ছিল তার পরিবারের প্রথম স্কুলে যাওয়া সদস্য।
  2. ম্যান্ডেলার পূর্বপুরুষরা  ছিল স্থানীয় একটি রাজ পরিবারের সদস্য।
  3. ১৯২০ সালে স্কুলে ভর্তি হওয়ার পর উচ্চারণের সুবিধার্থে তার নাম পরিবর্তন করে নেলসন রাখেন এক শিক্ষক।
  4. খুব অল্প বয়সে কলেজে শ্বেতাঙ্গদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করার কারণে তাকে বিতাড়িত করা হয়।
  5. ম্যান্ডেলা আইন বিষয়ে উইটওয়াটারস্রান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন।
  6. সশস্ত্র সংগ্রাম করার জন্য তিনি ইথিওপিয়া ও মরক্কোতে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন।
  7. ম্যান্ডেলার প্রিয় খেলা ছিল বক্সিং।
  8. ছদ্মবেশ ধারণ করে চোখ ফাঁকি দেওয়ার ক্ষেত্রে তিনি খুব পারদর্শী ছিলেন।
  9. তিনি সব মিলিয়ে প্রায় ২৫০ আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।

এলান টিউরিংকে বলা হয় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার জনক। ১৯৫০ সালের দিকে এলান টিউরিং একটি মেশিন বুদ্ধিমান কিনা, তা পরীক্ষা করার জন্য
 একটি টেস্ট এর কথা উল্যেখ করে গিয়েছেন, যা টিউরিং টেস্ট নামে পরিচিত। ঐ সময় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে অনেক রিসার্চ হলেও এর পর 
অনেক দিন AI নিয়ে রিসার্চ বন্ধ থাকে। প্রধান একটা কারণ হিসেবে ধরা হয় কম্পিউটেশনাল পাওয়ার।



 ঐ সময়কার কম্পিউটার গুলো এত পাওয়ারফুল ছিল না।
 কম্পিউটারের প্রসেসিং পাওয়ার বাড়ার সাথে সাথে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে আবার রিসার্চ শুরু হয়েছে। কিছুদিন আগে Facebook, Google,
 Amazon মিলে AI এর উপর রিসার্চ করার জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। Elon Musk গঠন করেছেন OpenAI নামক প্লাটফরম।

বুদ্ধিমান প্রোগ্রাম তৈরি করার জন্য প্রধান যে বিষয়টা দরকার তা হচ্ছে Knowledge Representation & Reasoning।
 আর সুন্দর ভাবে Knowledge Representation & Reasoning এর জন্য মানুষের ব্রেইন কিভাবে কাজ করে, 
বিজ্ঞানীরা তার অনুকরণ করার চেষ্টা করছে।

আমরা মহাকাশ নিয়ে গবেষণা করি। মঙ্গলে মানুষের কলোনি তৈরি করার স্বপ্ন দেখি। সবই করি এই মস্তিষ্কটাকে কাজে লাগিয়ে।
 মহাকাশ অনেক দূরে হয়েও আমরা অনেক কিছু জানতে পারি। কিন্তু মস্তিষ্কটা কিভাবে কাজ করে, এখনো ঠিক মত আমরা বুঝে 
উঠতে পারি নি। যতটুকু বুঝে উঠেছি আমরা, তত টুকু ব্যবহার করেই আমরা বুদ্ধিমান সিস্টেম তৈরি করার চেষ্টা করছি।

মানুষের মস্তিক নিউরন দ্বারা গঠিত। আমাদের মস্তিষ্কে প্রায় ১০০ বিলিয়ন নিউরন রয়েছে। এগুলো একটা একটার সাথে কানেক্টেড,
 একটা নেটওয়ার্ক এর মত। এই জৈবিক নিউরাল নেটওয়ার্ক এর অনুকরণ করেই আর্টিফিশিয়াল নিউরাল নেটওয়ার্ক তৈরি করা হয়েছে।

আর্টিফিশিয়াল নিউরাল নেটোওয়ার্ক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার একটা অংশ মাত্র। মূলত এটি হচ্ছে মেশিন লার্নিং এর একটা শাখা।
 আর মেশিন লার্নিং হচ্ছে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর একটি শাখা। মেশিন লার্নিং ছাড়া AI এর অন্যান্য বিষয় গুলো হচ্ছে 
ন্যাচারাল ল্যাঙ্গুয়েজ প্রসেসিং, অবজেক্ট রিকগনিশন, প্যাটার্ন রিকগনিশন, রোবটিক্স, ইভোলিউশনারি কম্পিউটেশন 
যেমন জেনেটিক অ্যালগরিদম, ফাজি সিস্টেম, প্রবাবিলিটি, প্রিডিকশন, Knowledge management সহ অন্যান্য।



কম্পিউটার বা যে কোন মেশিন হচ্ছে বোকা বাক্স। এগুলোকে কাজে লাগানোর জন্য ইন্ট্রাকশনের দরকার হয়।
 প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ ব্যবহার করে আমরা কম্পিউটার বা যে কোন মেশিনকে কিছু ইন্সট্রাকশন দেই, কম্পিউটার বা মেশিন গুলো
 সে অনুযায়ী কাজ করে।

এই মেশিনকে আমরা যে ইন্সট্রাকশনই দিব, মেশিন সে অনুযায়ীই কাজ করবে। এর বাহিরে নিজ থেকে কিছু করতে পারবে না। 
মেশিন যেন নিজ থেকে কিছু করতে হলে তার কিছু বুদ্ধি শুদ্ধি লাগবে। মেশিনের বুদ্ধি শুদ্ধিকে আমরা বলি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা
 কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। একটা রোবটের কথা যদি চিন্তা করি, রোবটের বুদ্ধি হচ্ছে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স।

বিজ্ঞাপন এরিনা ওয়েব সিকিউরিটির ইথিক্যাল হ্যাকিং এবং সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ক অনলাইনে আয় শীর্ষক কোর্সটি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন - Click Here 

বুদ্ধি জিনিসটা কি?

বুদ্ধি হচ্ছে জ্ঞান আহরণ করা এবং তা প্রয়োগ করার ক্ষমতা। সাধারণ প্রোগ্রাম গুলো জ্ঞান আহরণ করতে পারে না। কিন্তু যে সব মেশিন বা
 প্রোগ্রাম এমন ভাবে তৈরি করা হয়, যেন নিজে নিজে কিছু শিখে নিতে পারে, সেগুলোকে আমরা বলি বুদ্ধিমান প্রোগ্রাম বা বুদ্ধিমান মেশিন। 
যেমন গুগল সার্চ প্রোগ্রামটা একটা বুদ্ধিমান প্রোগ্রাম। আমরা কিছু সার্চ করলে এটি আমাদের আগের সার্চ হিস্টোরি, বয়স, লোকেশন 
ইত্যাদির উপর নির্ভর করে আমাদের সার্চ রেজাল্ট দেখায়।
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স যদি আমরা খুব উন্নত করতে পারি, হয় এটি হবে সবচেয়ে দারুণ একটা পরিবর্তন অথবা সবচেয়ে ভয়ঙ্কর পরিবর্তন। 
এমনকি আমাদের অস্তিত্বও ধ্বংস হয়ে যেতে পারে। আমরা মানুষেরা বুদ্ধিমান, কিউরিয়াস। আমরা দেখতে চাই কি হবে ফিউচারে।
 এটাই হচ্ছে বুদ্ধি। আর এ জন্যই আমরা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর ডেভেলপ করে যাবো। আমরা চেষ্টা করে যাবো
 কম্পিউটারকে মানুষের মত বুদ্ধিমান করে তোলার।


কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পর্কে শিখতে চাইলেঃ

Udacity এর Intro to Artificial Intelligence কোর্সটা প্রাথমিক ধারণা নেওয়ার জন্য খুবি দারুণ। 
সব গুলো ইউনিভার্সিটিতে Artificial Intelligence: A Modern Approach বইটি থেকে পড়ানো হয়।
 নীলক্ষেত থেকে বইটি কিনতে পাওয়া যাবে। আর বইটির সহ লেখক হচ্ছেন Peter Norvig। পিটার নরভিগ হচ্ছেন গুগলের
 রিসার্চ টিমের ডিরেক্টর। আর Udacity’র এ কোর্সটার সহ ইন্সট্রাকটর। পিটার নরভিগের একটা দারুণ লেখা রয়েছে।
 Teach Yourself Programming in Ten Years। যারা পড়েন নি, একবার পড়ে নিতে বলব। 
এছাড়া এই কোর্সটি করার পর ইউডাসিটিতে আরো কিছু কোর্স রয়েছে, যেমন মেশিন লার্নিং ইত্যাদি। সেগুলোও দেখতে পারেন।


বিনোদনের জন্য এগুলো দেখতে পারেনঃ

Ex Machina (2015)
2001: A Space Odyssey
I, Robot
Matrix series
Chappie
Transcendence
The Terminator series
Star Trek series
Intelligence
Mr. Robot ইত্যাদি।